রাঙ্গামাটির উগলছড়ি বিলে হাজারো পাখি

23/02/2014 7:22 pmViews: 12
রাঙ্গামাটির উগলছড়ি বিলে হাজারো পাখি
মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, রাঙ্গামাটি : চারদিকে খাল-বিল শুকিয়ে যাচ্ছে।  জলজ পাখির খাদ্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। তাই হন্যে হয়ে পাখিলা খাবারের সন্ধানে ছুটছে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কিন্তু কোথাও খাবার না পেয়ে একমাত্র রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা বাঘাইছড়ি ইউনিয়নে উগলছড়ি বিলে এখন এসব পাখি ভিড় করেছ।

সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে বিলে হাজারো জলজ পাখির দল চোখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষি জমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহারের কারণে পাখির খাদ্য ও সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।

বিলের কৃষক মো. আলম বলেন, শুষ্ক মৌসুমও উগলছড়ি বিলে পানি থাকে। তাই পাখিরাও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই বিলে খাবারের জন্য ছুটে আসছে। প্রতিদিন পাখির সংখ্যা বাড়ছে। মনে হয় অন্য কোথাও খাবার পাচ্ছে না তারা। পাখিদের মধ্যে সাদা বক, টিট্টিভ, চেগা, পানকৌড়ি ও কয়েক ধরনের হাঁসসহ নাম না জানা আরো অনেক জলজ পাখি দেখা মিলে এসব বিলে।

বিলের পাশবর্তী লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় খাল-বিল এখন প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। এতে অতিথি ও স্থানীয় জলজ পাখির বিচরণ ক্ষেত্র ক্রমে সীমিত হয়ে গিয়েছে। ফলে দেখা দিয়েছে পাখির খাদ্য সংকট।

ঐতিহ্যবাহী উগলছড়ি বিলও এখন ভরাট হওয়া উপক্রম। বিলে বর্তমানে দুই থেকে তিনটি স্থানে সারা বছর পানি থাকে। সেই পানিতে এখন প্রতিদিন বসে পাখির মেলা। কোথাও খাবার না পেয়ে এখন খাবারের খোঁজে পাখি কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত থাকে সারাদিন। এই পাখি দেখতে বিভিন্ন গ্রামে থেকে ছুটে আসছেন শত শত লোক।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিলের চারদিকে ধানক্ষেত মাঝখানে হাটু থেকে কোমর সমান পানি। বিলজুড়ে চরে বেড়াচ্ছে নানা ধরনের জলজ পাখি। কয়েকটি স্থানে পাখি বসার জন্য গাছের ডাল ফেলে রাখা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে।

লাল্যাঘোনা গ্রামের মো. মাসুম বলেন, বিলের চারদিকে বোরো চাষ করা হয়। মাঝখানে পানি থাকে শুষ্ক মৌসুমে পানি ও খাবারের জন্য হাজার হাজার পাখি এসে হাজির হয়। অনেক শিকারী এসে হানা দেয়, তাদের তাড়াতে হিমশিম খেতে হয় চাষীদের।

বাঘাইছড়ি পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রাণী বিজ্ঞান সমিতির সদস্য মো. আবুল ফজল জানান, বর্তমানে কৃষি জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন বিলে ও খালে পাখির খাদ্য কমে যাচ্ছে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় বক পানকৌড়িসহ জলজ পাখির খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়। তবে আগের তুলনায় পাখির সংখ্যাও কমছে।

Leave a Reply