“রাঙ্গামাটিতে সন্ধ্যা থেকে ফের কারফিউ”
রাঙ্গামাটি : রাঙ্গামাটি শহরে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত আবারও কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রোববার সন্ধ্যায় কারফিউ জারির পর নতুন করে কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা টহল দিচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। পাঁচটার পর থেকে আগামীকাল সকাল সাতটা পর্যন্ত আবারও কারফিউ বলবৎ থাকবে’।
জেলার পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদের দাবি, ‘পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে’।
গত শনিবার মেডিকেল কলেজের শিক্ষাকার্যক্রম উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের সঙ্গে সন্তু লারমা-সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরে তা বাঙালি-আদিবাসী সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয়। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় রাঙামাটি পৌরসভা এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
গতকাল সন্ধ্যার দিকে ১৪৪ ধারা বহাল থাকা অবস্থায় রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন কারফিউ জারি করেন।
এছাড়া বিভিন্ন স্থানে গতকালের সংঘর্ষ ও সহিংসতায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নুযয়েন খীসা জানান, রোবাবার সন্ধ্যা থেকে হাসপাতালে সাতজনকে ভর্তি এবং একজন পুলিশ সদস্যকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
হঠাৎ কারফিউ জারি হওয়ায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের কার্যালয়ে আটকে পড়েন।
রোববার সকাল ৮ টার পর থেকে কারফিউ শিথিলের ঘোষণায় তারা নিজেদের বাড়িতে এসে আবার নিজ নিজ কার্যালয়ে যান।
নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের ঝুঁকির মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রশাসনের উচিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা করা। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পরিবারের লোকজনের জন্য সব সময় চিন্তায় থাকতে হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বনরূপা বাজারে দুই দিনের সহিংসতায় কাঁচাবাজারসহ সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার লোকজন এলাকার ছোট ছোট দোকানে নিত্যপণ্য কিনতে ভিড় জমিয়েছে। এসব দোকানে নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে বলে দোকানিরা জানান। শহরের বড় বড় পাইকারি দোকান বন্ধ থাকায় নিত্যপণ্য সরবরাহ দুই দিন বন্ধ রয়েছে বলে দোকানিরা জানান।