রংপুরে জাপানি নাগরিক কোনিও’র দাফন সম্পন্ন
দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হওয়া জাপানি নাগরিক হোশি কোনিওর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে রংপুরের মুন্সিপাড়ার কবরস্থানে তাকে দফন করা হয়। রংপুরের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কবরস্থানের রেজিস্ট্রাররা এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও মুসল্লীদের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার জানান, কোনিও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। এ কারণে জাপানি দূতাবাস আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছিল, যাতে রংপুরেই তাকে দাফন করা হয়।
তিনি বলেন, এ কারণে মুসলিম রীতি অনুযায়ী সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টায় তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেএ বিষয়ে নির্দেশনা পাওয়ার পরই দাফনের সব ব্যবস্থা করা হয়।
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু জানান, কুনিও হোশিকে দাফন করার জন্য সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
অপরদিকে র্যাব সূত্র জানায়, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত জায়গায় কুনিওর মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
এদিকে মধ্যরাতে গোপনে হোশি কোনিওর দাফন সম্পন্ন করায় জনমনে নানা প্রশ্ন ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।অনেক মুসল্লী জানাজায় অংশ গ্রহণ করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, হোশি কোনিও নওমুসলিম হওয়ায় তার জানাজায় হাজার হাজার মুসল্লী অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু প্রশাসনের লুকোচুরিতে তারা তা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর সকালে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন কোনিও। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও দৈনিকচুক্তিতে কুনিওর ভাড়া করা রিকশাচালক মোন্নাফ মিয়া যুগান্তরকে জানান, তিনি প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিনেও কুনিও হোশিকে নিয়ে খামারবাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় ঘটনাস্থলের কাছেই একজন মোটরসাইকেল চালু অবস্থায় পাকা সড়কে হারাগাছ যাওয়ার পথে বসেছিলেন। আরও দু’জন খামারবাড়ি যাওয়ার পথে কাঁচা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। তারা রিকশা থামিয়ে দু’জনের হাতে থাকা দুটি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে পরপর ৩টি গুলি ছুড়লে কুনিও হোশি রিকশা থেকে মাটিতে ছিটকে পড়েন। এ সময় ঘাতকরা রিকশাচালককে ধমক দিয়ে বলে, তুই দৌড়ে পালা, না হলে তোকেও গুলি করব। মোন্নাফ মিয়া আরও জানান, ঘাতকরা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। এদের দুজনের গায়ে হাফহাতা শার্ট ও পরনে জিন্সপ্যান্ট, অপরজনের গায়ে টি-শার্ট ও জিন্স প্যান্ট ছিল। তিনজনই বয়সে তরুণ।
মৃত্যুর পর থেকে তার লাশ জাপানে নেয়া হবে কি না এ নিয়ে কথা বার্তা চলছিল। কোনিও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় তার লাশ জাপানে নিতে স্বজনদের কোনো আগ্রহ না থাকায় তাকে রংপুরে দাফন করা হয়।