মেট্রোরেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
দেশের ১৬ কোটি মানুষের বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের মেট্রোরেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি স্টেশনে ফলক উন্মোচন করে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছোটবোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। উদ্বোধনের পর টিকিট কেটে মেট্রোরেলে প্রথম যাত্রী হিসেবে চড়বেন প্রধানমন্ত্রী। দিয়াবাড়ি থেকে মেট্রোরেলে আগারগাঁও স্টেশনে আসবেন তিনি।
সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা
মেট্রোরেলের ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। এর মাঝে মেট্রোরেলের আরও সাতটি স্টেশন রয়েছে। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ট্রেন চলবে উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত।
যাত্রীরা যেভাবে উঠবেন মেট্রোরেলে: মেট্রোরেলের শুরুর স্টেশন হবে উত্তরার দিয়াবাড়ি। তিনতলা স্টেশন ভবনের উপরের তলার প্ল্যাটফরম থেকে যাত্রীরা ট্রেনে উঠবেন। এজন্য এস্কেলেটর দিয়ে স্টেশনের দ্বিতীয়তলায় কনকোর্স হলে প্রবেশ করতে হবে যাত্রীদের। প্রতিবন্ধী কিংবা বয়স্ক মানুষের জন্য লিফটের ব্যবস্থা রয়েছে। কনকোর্স হলে প্রবেশ করলে ডিজিটাল টিকিট কাউন্টারের মাধ্যমে মেশিনে টাকা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করবেন যাত্রীরা। এ ছাড়া টপআপ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও টিকিট কাটার ব্যবস্থা রয়েছে। ডিজিটাল এসব পদ্ধতি ছাড়াও ম্যানুয়াল কাউন্টারের সুবিধাও রয়েছে স্টেশনে। প্ল্যাটফরমে ওঠার প্রবেশ পথে টিকিট পাঞ্চ করে যাত্রীরা দোতলা থেকে নির্ধারিত এস্কেলেটর বা সিঁড়ি দিয়ে মেট্রোরেলের প্ল্যাটফরমে যাবেন। প্ল্যাটফরমে ট্রেন এসে থামার সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে যাবে। এরপর ট্রেনে থাকা যাত্রীরা নামার পর উঠার সুযোগ পাবেন অন্য যাত্রীরা।
মেট্রোরেলের ব্যয়: মেট্রোরেল প্রকল্পের পিআইসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালের জুলাইয়ে অনুমোদিত উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল অর্থাৎ ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট-৬ (এমআরটি-৬) নির্মাণ প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি সাত লাখ টাকা। তবে এই ব্যয় বেড়ে এখন ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ধরা হচ্ছে। অর্থাৎ নতুন করে মেট্রোরেলের নির্মাণব্যয় বাড়ছে ১১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সংশোধিত হিসাবে সরকারের পক্ষ থেকে ১৩ হাজার ৭৯৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা দেয়া হবে। আর জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ দেবে ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এদিকে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এক দশমিক ১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করতে গিয়ে পূর্ত কাজে ৭১৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, বৈদ্যুতিক ও মেকানিক্যাল ব্যবস্থা (ই অ্যান্ড এম) স্থাপনে ৩২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং রোলিং স্টক (ইঞ্জিন-কোচ) খাতে ৫০ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয় বাড়বে। অর্থাৎ বর্ধিত অংশের জন্য ব্যয় বাড়ছে মোট এক হাজার ৮৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা।