মেঘনায় ভেসে আসা লাশগুলো কি মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমানের?

17/03/2014 10:13 pmViews: 6
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা: নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার পশ্চিম উপকূলে মেঘনা নদীতে ভেসে আসা লাশগুলো নিয়ে রহস্য বাড়ছে। এই মৃতদেহগুলো মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমানের হতভাগা যাত্রীদের কি না- তা নিয়েও স্থানীয়দের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সেইসঙ্গে গত শুক্রবার থেকে মেঘনায় মৃতদেহ ভাসতে থাকলেও পুলিশের নিরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার পশ্চিম উপকুলে মেঘনা নদী থেকে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও কোস্টগার্ড। সকালে স্থানীয়রা মৃতদেহ তিনটি ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ও কোস্টগার্ড সেগুলো উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা বলছেন, তারা গত শুক্রবার থেকে মেঘনায় অন্তত ১৫টি মৃতদেহ ভাসতে দেখেছেন। কিন্তু পুলিশ উদ্ধার অভিযানে নেমেছে সোমবার। পুলিশের দাবি, কেউ তাদের মৃতদেহ ভাসতে দেখার খবর দেয়নি। যদিও স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, পুলিশ দায়িত্ব এড়ানোর জন্যই এ কথা বলছে। গণমাধ্যমে মৃতদেহ ভাসতে দেখার খবর আসতে থাকায় পরিস্থিতির চাপে পড়ে পুলিশ উদ্ধার অভিযানে নেমেছে।

উপজেলার সুখচর ও চরকিং ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাদের হিসাব মতে শুক্রবার বিকেল থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত চারদিনে তারা পাশের মেঘনায় কমপক্ষে ১৫টি লাশ দেখেছেন। শনিবার থেকে লোকজন লাঠি হাতে নদীর কুলে কুলে হাঁটতে থাকে। লাশ দেখলেই লাঠি দিয়ে ঠেলে দেয়। শনিবার বিকেলে জনৈক জসিম মাঝি চেয়ারম্যান ঘাটে একটি লাশ লাঠি দিয়ে ঠেলে দেয়। এ সময় সেখানে প্রায় ৫০-৬০ জন লোক দাঁড়ানো ছিল। রোববার ভোরে গিয়ে দেখা যায় বাদশা মিয়া গ্রামের উত্তরে এবং পশ্চিমে মেঘনার কুলে মাটিতে আটকে পড়া দুটি লাশ কুকুরে খাচ্ছিল।
স্থানীয় লোকজন এবং পুলিশ ও কোস্ট গার্ড কেউই লাশগুলো কোথায় থেকে এসেছে বলতে পারছে না। হাতিয়ার কেউ খুন হয়েছে বা কোনো নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে, সোমবার পর্যন্ত এরকম খবরও পাওয়া যায়নি। সে কারণে স্থানীয় মানুষের মনে প্রশ্ন লাশগুলো তাহলে কোত্থেকে এসেছে?

হাতিয়ার চা দোকান ও অন্যান্য স্থানে, রাস্তাঘাটে লোকজন বলাবলি করছে যে পাশের মেঘনায় ভাসমান লাশগুলো হয়তো মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমানের যাত্রীদের হতে পারে।

এদিকে মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টার তাদের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত  একটি খবরে এরকমই আশংকার কথা বলেছে। ওই প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের মেঘনা নদীতে এভাবে মৃতদেহ ভাসতে দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে সেগুলো নিখোঁজ বিমানের যাত্রীদের কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বী জানান, পুলিশ চরকিং ইউনিয়নের চরবগুলা খালের মুখে দক্ষিণ দিকে মেঘনা থেকে যে অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করেছে, তার পরনে একটি আন্ডারওয়্যার ছিল, বয়স আনুমানিক ২৭-২৮ বছর, কিন্তু গায়ের রঙ বোঝা যাচ্ছে না।

এদিকে সুখচর ইউনিয়নের চর আমানুল্যাহ গ্রামের জগদীশ জলদাস জানান, রোববার রাতে তিনি রামচরন বাজারের পশ্চিম দিকের মেঘনায় জাল বসান। তার জালে একটি লাশ আটকা পড়ে। তিনি দুর্গন্ধযুক্ত লাশটি অনেক কষ্টে জাল থেকে বের করে দেন।

কিন্তু উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলো দেখে মনে হচ্ছে, এগুলো কয়েকদিন ধরে নদীতে ভাসছিল। যে কারণে চেহারা বোঝা যাচ্ছে না।

Leave a Reply