মুরাদনগর ভূমি অফিসের চিত্র পাল্টে দিতে প্রস্তুত স্মার্ট রেকর্ড রুম
কে এম শারফিন শাহ্ : কুমিল্লা (ব্যুরো চীফ) কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার ভূমি অফিসের দালালের দৌরাত্ম্য, দিনের পর দিন হয়রানি ও বাড়তি টাকা আদায় ভূমি অফিস নিয়ে এসব নেতিবাচক ধারণা সেবাগ্রহীতাদের। এসব নেতিবাচক ধারণা পাল্টে দিয়েছেন বিগত ২০ বছরে হয়রানি মূলক অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সাহসী চৌকস কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাজমুল হুদা। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন রূপে ফিরেছে মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার কার্যালয়ের স্মার্ট রেকর্ড রুম। যার মাধ্যমে দুই মিনিটেই সেবাগ্রহীতারা পেয়ে যাবেন যে কোন ভূমি সংক্রান্ত নথি বা, তথ্য। মুরাদনগর উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের আনন্দের জোয়ার বয়ে বেড়াচ্ছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু: মুশফিকুর রহমান স্মার্ট রেকর্ড রুমের শুভ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের নতুন কার্যক্রম শুরু। ভূমি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক অর্থায়নে এবং উপজেলার মাননীয় সংসদ সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সহকারি কমিশনারের একান্ত প্রচেষ্টায় পরিত্যাক্ত একটি ঘরকে আধুনি ছোয়ায় তৈরী করা হয়েছে স্মার্ট রেকর্ড রুমটি,যাকে আধুনিক নথিশালাও বলা চলে। একজন সরকারি কর্মকর্তা চাইলেই যে একটা এলাকার চেহারা পালটে দিতে পারেন। অসহায় মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারেন-তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই সহকারি কমিশনার মোঃ নাজমুল হুদা।
হয়রানি আর দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে সেবা দিতে পেরে যেমনি খুশি ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, তেমনি আনন্দিত ভূমি অফিসে বিভিন্ন কাজে আসা সাধারণ মানুষরাও। নাজমুল হুদা যোগদানের পর পরই দীর্ঘদিন থেকে একই কর্মস্থলে থাকা প্রায় উপসহকারী ২০জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে বদলী। ভূমি সেবায় জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
গত অর্থবছরে ই-নামজারী ৮ হাজার ৫৩৯টি হলেও এই অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০২টি নামজারী নিস্পত্তি করে কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১ম স্থান অর্জণ করেছেন। এছাড়াও ৩১৮টি মিস কেস নিস্পত্তি, কৃষি জমি রক্ষায় ১৫৩টি ড্রেজার মেসিন জব্দ ও ধ্বংস, ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা, ৩১ একর সরকারি খাস ভূমি উদ্ধার। যার আনুমানিক মূল্য ৬৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা এবং উদ্ধার কৃত খাস ভূমিতে ৫৫৯টি ঘর নির্মাণ করে ভূমিহীন ও গৃহহীনের মধ্যে কবুলিয়ত ও নামজারীসহ দখল হস্তান্তর করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) মো: নাজমুল হুদা বলেন, অনেক অফিসে অনুমতি ছাড়া সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারেন না; কিন্তু আমার দপ্তরকে সকলের জন্য উম্মুক্ত করে রেখেছি। যে কেউ ভূমি সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা নিয়ে আমার সামনে হাজির হতে পারেন। সপ্তাহের প্রতিটি দিনই ভুক্তভোগী সেবাগ্রহীতাদের সমস্যার কথা আমি শুনি, তাদের সমস্যা দ্রুত সমাধানেরও চেষ্টা করি। তিনি আরো বলেন, ‘স্মার্টফোনের মাধ্যমে ঘরে বসেই সেবাসংক্রান্ত বিভিন্ন আবেদন করছেন ভূমি মালিকরা। উপজেলার সর্বস্তরের ভূমি মালিকদেরকে স্মার্ট ভূমিসেবা দিতেই এই স্মার্ট রেকর্ড রুম প্রস্তুত করা হয়েছে।