মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের পরেও প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আর্সি নদীর মাটি উত্তোলন
মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের পরেও প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আর্সি নদীর মাটি উত্তোলন
দেলোয়ার হোসেন , কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ধনপতি খোলায় প্রশাসন কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে চলছে আর্সি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন। এরই মধ্যে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে।
>> স্থানীয় সূত্রে ও সরেজমিনের গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল আমিনের নেতৃত্বে প্রায় দুই মাস ধরে অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে আর্সি নদী থেকে মাটি উত্তোলন করছে। স্থানীয় ভাবে বিষয়টি জানানো হলে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল ধনপতি খোলার আর্সি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের সময় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ও তার কয়েকজন সহযোগীকে ধরে নিয়ে আসে। পরে এসিল্যান্ড তার নিজ কর্যালয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগীদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করে মুচলেখা রাখে ছেড়ে দেয়। ভূমি অফিস থেকে ছাড়া পেয়ে ওইদিন বিকেলেই আইনের কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আবারো ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে মাটি উত্তোলন শুরু করে। খবর পেয়ে বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারি কর্মকর্তা হালিমা আক্তার মাটি উত্তোলনে বাধা দিলে ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন তাকে নানা ভাবে হুমকি প্রদান করে।
>> হুমকি প্রদানের বিষয়ে তহশিলদার হালিমা আক্তার বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানার পর আবারো নদী থেকে মাটি উত্তোলন করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি সরজমিনে গিয়ে নদী থেকে মাটি উত্তোলনে বাধা দিলে। রুহুল আমিন চেয়ারম্যান আমাকে নানা ভাবে হুমকি ধমকি প্রদান করে। পরে আমি বিষয়টি এসিল্যান্ড ও ইউনো স্যারকে অবহিত করি। পরবর্তীতে আমার সুরক্ষার জন্য আমি বাঙ্গরা বাজার থানায় রুহুল আমিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
>> অভিযোগের বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, তহশিলদার হালিমা আক্তারের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে সেটি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের বিষয়ে কোন প্রকার হুমকি প্রদানের নয়।
>> এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, আর্সি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের সময় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি ড্রেজার মালিক মুচলেখা দিয়েছে তারা আর মাটি উত্তোলন করবে না। যদি তার পরেও করে থাকে তাহলে আমরা বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখছি। আর তহশিলদার হালিমা আক্তারের হুমকির বিষয়টি আমার জানা নেই।
>> অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, স্থানীয়দের মতামত নিয়েই আর্সি নদী থেকে মাটি উত্তোলন করে ধনপতি খোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করা হচ্ছে। মাঝ খানে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা হয়েছে। এখন অল্প একটু জায়গা ভরাটের বাকি তাই আবারো ড্রেজার চালাতে হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের মতামত নিয়েই। আর তহশিলদার হালিমা আক্তারকে আমি কোন প্রকার হুমকি প্রদান করি নাই। এটা সম্পূর্ন মিথ্যা।