মুরাদনগরে প্রেমিকার অন্তরঙ্গ দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে টাকা আদায়, প্রেমিকসহ আটক ৩
মুরাদনগরে প্রেমিকার অন্তরঙ্গ দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে টাকা আদায়, প্রেমিকসহ আটক ৩
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে এক প্রেমিকা (১৮) এর অন্তরঙ্গ মূহর্তের দৃশ্য মোবাইলে ধারন করে তা ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছেন সজিব কুমার দাস (১৯) নামে এক প্রেমিক।
রোববার এ নিয়ে ভিকটিম কলেজ ছাত্রী ওই মেয়ের দুলাভাই বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ৩ জনের নামোল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ৫জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করে। এ ঘটনায় জড়িত তিন আসামীকে আটক করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ।
আটককৃত প্রেমিক সজিব কুমার দাস (১৯) মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার বানীজুরি গ্রামের প্রদিপ চন্দ্র দাসের ছেলে। সহযোগীরা হলো দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রুহুল আমিন (১৭), মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ই¯্রাফিল হোসেন অয়ন(১৫)।
পুলিশ ও অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার নগড়পার গ্রামে ভিকটিম কলেজছাত্রীর বাসার সাথে সজিব কুমার দাস ভাড়া বাসায় থাকতো। পাশাপাশি বাসা হওয়ার সুবাদে দুবছর যাবত প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে সজিব কুমার দাসের সাথে ওই কলেজছাত্রীর। ২৩জুন দুপুরে কৌশলে ভিকটিম ওই কলেজ ছাত্রীকে উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের হুমায়ন কবিরের বাড়িতে নিয়ে যায় সজিব কুমার দাস। সেখানে সজিব কুমার দাস ওই কলেজ ছাত্রীকে বাড়ির ছাদে যাওয়ার সিড়িতে নিয়ে কাপর খুলে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় এবং কিছু সময় সেখানে অতিবাহিত করে। সে সময় পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী সজিব কুমার দাসের বন্ধু রুহুল আমিন ও ই¯্রাফিল হোসেন অয়ন সহ অজ্ঞাতরা সে অন্তরঙ্গ মূহর্তের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারন করে টাকা দাবী করে। এসময় ভিকটিম কলেজ ছাত্রীকে সজিব কুমার দাস জানায়, যদি তার বন্ধুদের টাকা না দেওয়া হয় তাহলে এ অন্তরঙ্গ মূহর্তের দৃশ্য ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিবে তার বন্ধুরা। সে সময় ভিকটিমের কাছে থাকা নগদ ৭হাজার টাকা সজিব কুমার দাসের বন্ধুদের হাতে তুলে দিয়ে সেখান থেকে বাসায় ফিরে আসে ওই কলেজ ছাত্রী।
পরবর্তীতে ভিকটিম কলেজছাত্রী ২৯জুন নগড়পার বাসা থেকে উত্তর ত্রিশ গ্রামে প্রাইভেটে যাওয়ার সময় প্রেমিক সজিব কুমার দাস সহ তার বন্ধুরা রাস্তায় আবার টাকা দাবী করে এবং টাকা না দিলে সে ভিডিও ছড়িয়ে দেবার হুমকি দেয়। পরে ওই কলেজছাত্রী গলায় থাকা একটি স্বর্নের চেইন তাদের হাতে তুলে দেয়। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই ১৩জুলাই প্রেমিক সজিব কুমার দাস তার ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোন থেকে ভিকটিমের মায়ের কাছে ফোন দিয়ে ৩৫ হাজার টাকা দাবী করে।
পরে এ ঘটনাটি ভিকটিম কলেজছাত্রী তার পরিবারের কাছে জানালে ১৭জুলাই বিকেলে পরিবারের লোকজন প্রেমিক সজিব কুমার দাসকে দাবীকৃত টাকা নেওয়ার জন্য নগড়পার চিলআউট নামে একটি রেস্টুরেন্টে আসতে বলে। তখন সজিব কুমার দাস সহ তার সহযোগী বন্ধু রুহল আমিন ও ই¯্রাফিল হোসেন অয়ন কে নিয়ে টাকা নেওয়ার জন্য সে রেস্টুরেন্টে আসে। এসময় ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা তাদের আটক করে মুরাদনগর থানা পুলিশকে খবর দিলে মুরাদনগর থানার এসআই হামিদুল ইসলাম বিপিএম তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল বারী ইবেনে জলিল এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আটককৃত ৩ আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা দায়েরের পর সোমবার দুপুরে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।