মিয়ানমার থেকে ফেরত আনা হলো ২৬ বাংলাদেশীকে
ঢাকা: প্রায় আড়াই বছর আগে মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে আটক ২৬ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত এনেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। দালাল চক্রের হাতে পড়ে বঙ্গোপসাগরে তারা আটক হয়েছিলেন এবং এরপর এই আড়াই বছর তারা মিয়ানমারের কারাগারে ছিলেন। তবে ওই ঘটনায় আটক দেড় শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিক এখনও মিয়ানমারের কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বিজিবি সূত্র জানায়, বুধবার দুপুরে মিয়ানমারের মংডু শহরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের অভিবাসন কেন্দ্রের মধ্যে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বিজিবির কাছে কারামুক্ত ২৬ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করা হয়। এদের মধ্যে টেকনাফ উপজেলার ২১জন, কক্সবাজার সদর উপজেলার ৪জন ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর একজন বাসিন্দা রয়েছেন।
বৈঠকে আট সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ৪২ বিজিবির টেকনাফ সদর চৌকির কোম্পানি কমান্ডার মো জাকারিয়া। আর ১২ সদস্য দলের নেতৃত্ব দেন মিয়ানমার বর্ডার অভিবাসন কেন্দ্রের লেফটেন্যান্ট ইউ থোন থোন।
ট্রলারে নাফনদী অতিক্রম করে ২৬ বাংলাদেশিকে টেকনাফ আনা হয় এবং পরে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের জন্য থানা পুলিশে সোপর্দ করে বিজিবি।
মুক্তি পাওয়া চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মো. আনোয়ার ইসলাম (৩৯) বলেন, ২০১২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে শাহপরীর দ্বীপের ধলু হোসেন, শরীফ হোসেন, কচুবনিয়ার আব্দুল হামিদ ও উসমান গনির মাধ্যমে দালালচক্রের সদস্যরা তাদের ৮৩ জনকে স্থানীয় হারিয়াখালী ঘাটে নিয়ে যায়। এরপর মাথাপিছু ৪০হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে তাদের গভীর সাগরে অপেক্ষমাণ জাহাজে তুলে দিচ্ছে বলে ছোট একটি কাঠের নৌকায় তুলে দেয়। নৌকাটির ইঞ্জিন বিকল হলে তারা সাগরে চার দিন ভাসতে ভাসতে মিয়ানমারের জলসীমা অতিক্রম করলে সেদেশের নৌবাহিনী ধরে ফেলে। এরপর ৮৩যাত্রীসহ নৌকাটি আটক করে নিয়ে যান। পরে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠায়।
ফেরত আসা কক্সবাজারের ইসলামপুরে বাসিন্দা মো ইলিয়াছ (৩৫) জানান, মিয়ানমারের সাজা শেষ হওয়া আমরা কয়েকজন ফিরে আসলেও সেখানে আরও দেড় শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিক মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
৪২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আবু জার আল জাহিদ বলেন, দুদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিজিবি-অভিবাসন কেন্দ্রের সঙ্গে পত্র যোগাযোগের পর অবশেষে ২৬জনকে ফেরত আনা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রনজিৎ কুমার বড়ুয়া বলেন, মিয়ানমার থেকে ফিরে আসা ২৬ বাংলাদেশির কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করে তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।