মালয়েশিয়ায় ২৫৫ বাংলাদেশী আটক
ঢাকা: অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় দফা অভিযানের প্রথম রাতেই দেড় হাজারের বেশি বিদেশীকে আটক করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৫৫ জন বাংলাদেশী রয়েছেন বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বারনামার প্রতিবেদনে বলা হয়, নিবন্ধিতদের বৈধ হতে বেঁধে দেয়া তিন মাস সময় শেষ হওয়ার পর সোমবার মধ্যরাত থেকে রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ পুরো মালয়েশিয়াজুড়ে এই অভিযান শুরু হয়। দেশটির অভিবাসন বিভাগ, পুলিশ ও পিপলস ভলান্টিয়ার কর্পসের (রেলা) প্রায় ১০ হাজার সদস্য এই অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ জাহিদ হামিদীকে উদ্ধৃত করে বারনামার খবরে বলা হয়, সারা দেশে মোট ১০৭টি স্থানে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মোট এক হাজার ৫৬৫ অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে।
এদের মধ্যে ২৫৫ জন বাংলাদেশী ছাড়াও ৬৯৫ জন ইন্দোনেশীয়, মিয়ানমারের ১৫৭ জন রয়েছে। বাকিরা কম্বোডিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, চীন, নাইজেরিয়া ও থাইল্যান্ডের নাগরিক।
কুয়ালালামপুর ছাড়াও সেরেমবান, পেনাং, কেদাহ, জোহর বাহারু থেকে ওই বাংলাদেশিদের আটক করা হয় বলে বারনামা জানিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামিদী বলেন, “যাদের আটক করা হয়েছে তাদের সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান বা যার যার দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হবে।”
আটক বিদেশীদের তথ্য ইতোমধ্যে বায়োমেট্রিক তথ্যভাণ্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে তারা আর কখনো মালয়শিয়ায় প্রবেশ করতে না পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মন্টু কুমার বিশ্বাস মঙ্গলবার জানান, “আমরা মালয়শিয়া প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি।”
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হতে দুই ধাপে প্রায় দুই বছর সময় দেয় দেশটির সরকার। প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ধাপে দুই লাখ দুই হাজার বাংলাদেশী শ্রমিক বৈধ হওয়ার সুযোগ পান।
দ্বিতীয় ধাপে বৈধতার প্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছরের ২১ অক্টোবরে, এই কার্যক্রম শেষ হয় সোমবার।
দ্বিতীয় ধাপে মাত্র ৩০ হাজার বাংলাদেশী বৈধ হওয়ার আবেদন করেন। এদের মধ্যে থেকে কতজন বৈধতা পেয়েছেন- তা জানতে কয়েকদিন সময় লাগবে বলে মন্টু বিশ্বাস জানান।
এদিকে মালয়েশিয়ায় অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশীদের সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনো সহায়তা দেয়া হবে না বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সোমবার মোশাররফ হোসেন বলেন, “দুই বছর সময় হাতে পাওয়ার পরও যারা বৈধ হয়নি, তাদের জন্য সরকারই লড়বে না।”
এদের রক্ষা করলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রম বাজার হুমকির মুখে পড়তে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
হয়রানি ও গ্রেফতার এড়াতে সে দেশে ‘অবৈধভাবে’ অবস্থানরত বাংলাদেশীদের নিজ উদ্যোগে দেশে ফিরে আসার পরামর্শ দেন তিনি।
জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ বাংলাদেশী বৈধভাবে কাজ নিয়ে মালয়েশিয়া গেছেন।