মহাত্মাগান্ধী স্বর্ণপদক পাচ্ছেন সাংবাদিক জহির

29/09/2013 11:03 amViews: 19

01প্রেমানন্দ ঘরামী, বরিশাল ॥ সাংবাদিকতায় অবদান রাখার জন্য মহাত্মাগান্ধী স্বর্ণ পদক ২০১৩ এর চুড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন গৌরনদীর  বরেন্য সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম জহির। মানবাধিকার ও পরিবেশ সাংবাদিক সোসাইটি (মাপসাস) প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব মোঃ গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সাংবাদিক জহির ১৯৮০ সালের প্রথমদিকে শখের বসে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় গৌরনদী নিজস্ব সংবাদদাতা পদে নিয়োগ পাওয়ার মধ্যদিয়ে সৌখিন সাংবাদিকতা শুরু করেন। ১৯৮২সালের জানুয়ারি মাসে মাওলানা আকরাম খানের প্রতিষ্ঠিত তৎকালীন সময়ের বহুল প্রচারিত দৈনিক আজাদ পত্রিকার গৌরনদী সংবাদদাতা হিসেবে জাতীয় দৈনিকে কাজ শুরু করেন। একটানা গত ৩২ বছর যাবৎ এ পেশায় সৎ নিষ্ঠা ও সাহসীকতার সাথে সাংবাদিকতায় নিয়োজিত থেকে মানুষের কল্যানে সে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে দৈনিক প্রথম আলোর গৌরনদী প্রতিনিধি হিসেবে গত ১৪ বছর ধরে তিনি কর্মরত রয়েছেন। সাংবাদিকতা জীবনে গত ৩২ বছরই তিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবিচল ও দল নিরপেক্ষ। সংগ্রাম করেছেন অন্যায়, অবিচার ও শোষনের বিরুদ্ধে। সাংবাদিকতার শুরু থেকেই সকল সময় ক্ষমতাসীনদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তাদের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে লেখনি অব্যাহত রেখেছেন। এ জন্য তাকে সহ্য করতে হয়েছে নির্মম ও অমানবিক নির্যাতনসহ কারাভোগ। ১৯৮৫সালে সাময়িক শাসক এরশাদ সরকারের সময়ে দুঃশাসনের সংবাদ প্রকাশ করার অপরাধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় দুই মাস দশ দিন কারাভোগ করেন তিনি। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা প্রমান সাপেক্ষে ১ জুন জেল থেকে মুক্তি লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে তৎকালীন সরকারের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী বাহীনির সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে  লিখতে গিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হন তিনি। ১৯৮৮ সালে স্মরনকালের ভয়াবহ বন্যায় ত্রাণ বিতরণে কারচুপি, দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের কারনে তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের ষরযন্ত্রে তাকে আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করা হয়। তিনি ১৯৯৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় গৌরনদী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মদদপুষ্ঠ সস্ত্রাসী কর্তৃক  ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, লুটপাট,  সন্ত্রাস ও নিরীহ মানুষকে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরায় ২০০১ সালের ১৬ জুলাই তার (জহির) বাসভবনে ২৫/৩০জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ঘেরাও করে প্রকাশ্য দিবালোকে ফোন ফ্যাক্স লুট করে তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। ২০০১সালে গৌরনদী আগৈলঝাড়ায় ক্ষমতাসীন ৪ দলীয় জোট সরকারের ক্যাডারদের  সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরায় তাকে ভিন্ন ধরনের হয়রানী ও মানষিক নির্যাতন করা হয়। সততা নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার  জন্য সাংবাদিক জহির ২০০৫ সালে গৌরনদী প্রেসক্লাবের সাহসিকতা পদক লাভ, ২০০৯ সালে ভাষা সৈনিক কাজী গোলাম মাহাবুব পদক লাভ করেন। মাদক বিরোধী আন্দোলন ও সেরা প্রতিবেদন করার জন্য হিউম্যান ডেভলপমেন্ড অর্গানাইজেশন কর্তৃক ২০১১ সালে সম্মাননা পদক লাভ করেন। ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৭ এবং ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত তিনি গৌরনদী প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাসি তিনি সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তিনি আত্মনিবেদিত। সর্বপরি দল নিরপেক্ষ সাংবাদিক, ভাল কাজে সমর্থন ও মানুষের কল্যানে দল মতের উর্ধ্বে থেকে তিনি দীর্ঘ ৩২ বছর কাজ করায় আজ তিনি দলমত, ধর্ম, গোত্র নির্বিশেষে গৌরনদীর সকল মানুষের কাছে সমাদৃত হয়েছেন।

Leave a Reply