মমতাকে আর একদিন থাকার অনুরোধ শেখ হাসিনার
০৬ জুন, ২০১৫
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অন্যতম সফরসঙ্গী দেশটির পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বন্দোপাধ্যায় শুক্রবারই ঢাকা পৌঁছেছেন। রাত পৌনে ৯টার দিকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট মমতা ও সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করেন।
বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরনসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মমতাকে স্বাগত জানান।
ঐতিহাসিক সীমান্ত চুক্তির দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন মমতা। আজ শনিবার তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরেকদিন থাকার অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে ফোন করে তিনি এ অনুরোধ করেন।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ফোনে বাংলাদেশের মাটিতে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি সনির্বন্ধ অনুরোধ— থাকতে হবে অন্তত আর একটা দিন। কালই (শনিবার) ফিরে যাওয়া চলবে না! মমতা তাঁকে বললেন, ভেবে দেখি! আসলে কলকাতায় অনেক কাজ পড়ে রয়েছে তো।’ হাসিনা আজ (শুক্রবার) রাতেই মমতাকে নিজের বাসভবনে আসার আমন্ত্রণ জানান। মমতা হেসে বলেন কালই দেখা হবে।
কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, ঢাকা পৌঁছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগে মমতার সঙ্গে একান্তে কথাবার্তা সেরে নিতে চান মোদি। মোদির পাশে মমতার থাকাটাই এক গুরুত্বপর্ণ কূটনীতির বার্তা। কারণ এরই মধ্যে বিএনপি ঘোষণা করেছে, এ সফরে তিস্তা চুক্তি না হলে তারা আন্দোলনে নামবে।
ঢাকা যাওয়ার প্রাক্কালে মমতা এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, তিনি তিস্তা চুক্তির সম্ভাবনার বিরুদ্ধে নন। ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্কের বিরুদ্ধেও নন। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ রক্ষা করাটা তাঁর প্রথম কাজ। উত্তরবঙ্গ যদি তিস্তা চুক্তির ফলে প্রয়োজনীয় পানি থেকে বঞ্চিত হয়, তবে সেটা মানা তার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু আলোচনায় যদি এমন কোনও সূত্র বেরিয়ে আসে, যাতে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উভয়েই তাদের প্রয়োজনের পানি পেতে পারে, তাতে তাঁর আপত্তির কোনো কারণ থাকতে পারে না।
তিস্তা চুক্তির বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম কর্মীদের মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, তিস্তার পানিপ্রবাহ খতিয়ে দেখতে কল্যাণ রুদ্রের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য।
মমতা আরও বলেন, অতীতে যে চুক্তিটি তৈরি করা হয়েছিল, তাতে বেশকিছু ত্রুটি আছে। সেগুলো মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছেন। আমি নিজে বাংলাদেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমার বক্তব্য জানিয়ে এসেছি। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কোনোরকম নেতিবাচক সম্পর্ক নেই। কিন্তু আলাপ-আলোচনা না করে একতরফা কিছু করলে আমরা সেটা কিছুতেই মানতে পারব না। কারণ আমার কাছে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ সবার আগে।
জানা গেছে, ৬ জুন দুপুরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেই ঢাকা সফরের কথা ছিল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। কিন্তু ৭ জুন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক অনুষ্ঠান থাকায় মমতা একদিন আগেই শুক্রবার রাতে ঢাকা এসেছেন। মমতা শনিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন।