মনের ভাষা বুঝবে কম্পিউটার!
অনেক করে বলে-বুঝিয়ে, কথায়-ভাবে ভঙ্গীতে কিম্বা ইঙ্গিতে, ‘তাকে’ কথা শোনানো যাচ্ছে না? কাছের মানুষ যদি আপনার কথা শুনতে বা সেটিকে সঠিকভাবে বুঝতে না চান, তবে আর রাগ করে মুখ ভার করে থাকবেন না। সেই সুদিন আসতে আর বেশি দেরি নেই যেখানে মানুষ নয়, বরং সাধের কম্পিউটারটি বুঝে ফেলবে আপনার ভাষা বা মনের ভাব। বিশ্বাস হচ্ছে না তো? শুনতে গল্প হলেও আদতে কিন্তু এই খবর সত্যি! বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দুনিয়ায় কিছুই যে প্রায় অসম্ভব নয়!
মনের ভাব বা মুখের ভাষা বুঝে কাজ করতে গেলে মানুষের শব্দ ব্যবহার ও ভাষা সম্বন্ধে জানতে হবে কম্পিউটারটিকে প্রবলভাবে। এখানে আবার রয়েছে একটা অন্য সমস্যা। মানুষের দুনিয়ায় ভাষার তো কমতি নেই। একজন মানুষের পক্ষেই সব ভাষা জানা সম্ভব নয়; তাহলে কম্পিউটার কীভাবে তা রপ্ত করবে? বলাই বাহুল্য, প্রাথমিক পর্যায়ে কম্পিউটার বুঝবে সর্বজনগ্রাহ্য ইংরেজিকেই। আর সেই কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। আর কিছু দিনের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে এই ‘সুপারকম্পিউটারের’ জাদু! টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের, কার্টিন আর্ক সেই অসাধ্য সাধনটিই করতে চলেছেন, যেখানে কম্পিউটার কোনওরকম কোডিং বা ডিকোডিং ছাড়াই সরাসরি বুঝে নিতে পারবে মনুষ্য ভাষা। মানুষের লজিককে কম্পিউটারের বোঝার মতো ভাষায় পরিবর্তন করার বদলে, মানব বুদ্ধির একগুচ্ছ ‘টেক্সট’ বা কোডেড্ ভাষা দিয়ে শব্দগুলোর অর্ন্তবর্তী সম্পর্ক কম্পিউটারকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন কার্টিন।
বলতে সহজ লাগলেও আদতে সেই কাজ বেশ কঠিন। এমন একটি মডেল যা সত্যি করে বুঝে নেবে ভাষার মানে এবং প্রত্যেকটি শব্দকে একে অপরের থেকে আলাদা করার ক্ষমতা রাখবে, এ তো ছেলেখেলা নয়। এতে প্রয়োজন পড়তে পারে অনেক ‘হর্স পাওয়ার’ ও লিখিত কম্যান্ডেরও। কম্পিউটার, তার নিজের ‘ইনটিউশন’বা বোধবুদ্ধিমতো যাতে প্রতিটি শব্দের বিভেদ অনুযায়ী বুঝে নেয় কথার অর্থ- এমন প্রোগ্রামিং চালু করার পথে প্রায় সফল কার্টিন। বলাই বাহুল্য, এমন ধরনের গবেষণার জন্য তাঁর প্রয়োজন হয়েছে লক্ষাধিক টেক্সট বা কম্যান্ড। প্রাথমিকভাবে কার্টিন পিসি বা পার্সোনাল কম্পিউটারের ওপর এই পরীক্ষা চালালেও পরে সমান্তরাল কম্পিউটিং করেও চালাচ্ছেন গবেষণা।
তাহলে একবার ভেবেই দেখুন, কার্টিনের এই গবেষনায় জয় লাভের পর কতটা সুবিধে হবে মানুষের! মনের মানুষ মনের কথা না বুঝলেও, প্রিয় কম্পিউটার কিন্তু বুঝে নেবে আপনার ভাষা ও শুনে চলবে সেই কথা। সেই শুভদিনের অপেক্ষায় এখন সকল দেশই!