মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চা শ্রমিকদের
মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চা শ্রমিকদের
২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ফের শ্রমিক ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। এদিকে সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় চা শ্রমিক নেতা মোহন রবি দাশের নেতৃত্বে তিন শতাধিক চা শ্রমিক ঢাকা, সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। রোববার থেকে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা। পরে পুলিশের তৎপরতায় অরোধ তুলে নেয়া হয়। মোহন রবি দাশ বলেন,দাবি আদায় হওয়া না পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। দরকার পড়লে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।
শনিবার রাতে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (লেবার হাউসে) সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পালও কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু সাধারণ চা শ্রমিকরা এই ২৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। তাই আমরা সম্মিলিতভাবে প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
তাছাড়া এই সিদ্ধান্তের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিভিন্ন ভ্যালি কমিটি ফের আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। মনু ধলাই ও লস্করপুর ভ্যালির সভাপতি-সম্পাদকরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। মৌলভীবাজার জেলার মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি দনা বাউরি বলেন, আমার ভ্যালির ২৩টি বাগানের শ্রমিকরা এই মজুরি মানবে না।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, রোববার থেকে আমাদের শ্রমিক ধর্মঘট সকল চা বাগানে আগের মতোই চলবে।
এর আগে বিকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত শ্রম অধিদপ্তর কার্যালয়ে আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদ।
বৈঠকে সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে আপাতত: ১৪৫ টাকা করতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর থেকে ফিরে এলে চা শ্রমিকদের দাবি-দাওয়াগুলো নিয়ে বসবেন। ওই বৈঠক শেষে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করছি। আমাদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে এসে আমাদের সঙ্গে বসবেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে আমাদের দাবি-দাওয়া তাকে জানানো হবে। তাই তার আশ্বাসে আমরা আপাতত: ধর্মঘট প্রত্যাহার করছি। রোববার থেকে সব শ্রমিক কাজে যোগ দেবে বলেও জানান তিনি। এ ঘোষণা দেয়ার কয়েক ঘন্টার মাথায় সাধারণ চা শ্রমিকদের তোপের মুখে পড়ে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে পুন:রায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।