মজীনা-পঙ্কজের দৌড়ঝাঁপ, সঙ্কট নিরসনে দিনভর দফায় দফায় বৈঠক
আনোয়ারুল করিম : নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দেশের প্রধান দুই নেত্রীর মধ্যে সংলাপ প্রক্রিয়ার মধ্যে কূটনীতিকদের তত্পরতাও থেমে নেই। বিশেষ করে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা এবং ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন সোমবার অনেকটাই ব্যস্ত দিন কাটান। এদিন ড্যান মজীনা ও পঙ্কজ শরন নিজেদের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন। এ ছাড়া সোমবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সন্ধ্যায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী ভারতীয় হাইকমিশনারের বাসভবনে যান। সেখানেও তিনি ঘণ্টাখানেক অবস্থান করেন।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বাংলাদেশের নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক গতিবিধি এবং নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সঙ্কটের মধ্যে নিজেদের মতো করে সমাধানের পথ খুঁজছে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা। এদের মধ্যে এখন স্পষ্টতই তিনটি শাখা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহমত করা পশ্চিমা ও ইউরোপীয় কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতরা একটি অংশে, ভারত একটি অংশে এবং চীনসহ ইউরোপের অন্য কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা অপর অংশে অবস্থান করছেন। সূত্র জানায়, গত কয়েকদিনের পরিস্থিতিতে মার্কিন ও ভারতের অবস্থানের ওপরই এখন অবশ্য অন্য কূটনীতিকরা নির্ভর করে আছেন। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার মধ্যে আলোচনায় আগ্রহী। তবে এ প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন হবে তা নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়দিল্লির মতভেদ রয়েছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে গতকাল এই প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির নিশ্চয়ই একটি অবস্থান রয়েছে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংবিধানের মধ্যে থেকে স্থিতিশীল সরকার কাঠামোই দেখতে চায় ভারত। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেয়া কোনো শক্তির উত্থান কখনই প্রত্যাশা করে না ভারত।
ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন সোমবার বিকালে গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনার বাসভবনে যান। বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত দুজন একসঙ্গে কথা বলেন। মজীনা ও পঙ্কজ শরনের এই বৈঠকটি কূটনৈতিক অঙ্গনে তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা গতকাল এ ব্যাপারে জানান, মজীনার দিল্লি সফর সম্পর্কে জানতেই মূলত ভারতীয় হাইকমিশনার মজীনার বাসায় যান।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা গত শুক্রবার নয়াদিল্লিতে যান। তার আগে বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। গত শুক্রবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা। তার আগে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ন্যানি্স পাওয়েলের সঙ্গে আলোচনা করেন মজীনা। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই সফর নিয়ে এরই মধ্যে ভারতে প্রতিক্রিয়া হয়েছে। কূটনৈতিক একটি সূত্র দাবি করেছে, মজীনা ‘আমন্ত্রণ’ ছাড়াই ভারত সফরে যান। তবে আমন্ত্রণ ছাড়াই মজীনা কেনই বা ভারত সফর করলেন— সে প্রশ্নও উঠেছে। মার্কিন দূতাবাসের একটি সূত্রসোমবারজানায়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ভারতীয় হাইকমিশনারের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ ফিরিয়ে আনা, সব দলের অংশগ্রহণে ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং ‘চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ’ মোকাবিলার দিকগুলো উঠে আসে। এ ব্যাপারে ভারতের পক্ষ থেকে মজীনাকে জানানো হয়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত দেখতে চায় না ভারত; বিশেষ করে সংবিধান অনুযায়ী এ দেশে যেমন সরকার পরিচালিত হবে, তেমনি নির্বাচনও হবে সংবিধানসম্মতভাবে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ভারতের এই মনোভাব সমর্থন করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও চায় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ।
ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তার কাছে এ বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই কূটনীতিক সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে একসঙ্গে বসেছেন। তবে তাদের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থায় দুই প্রধান জোটের মতপার্থক্য নিয়ে আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে উদারতা ও সহনশীলতা আশা করার কথা বলা হয়। ভারতের পক্ষ থেকে মার্কিন দূতকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে; এমন অবস্থায় দেশটির সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো অবস্থান গণতন্ত্রকে ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়, মায়ানমার এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। সঙ্কট সমাধানে ‘সর্বোচ্চ ছাড়’ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার প্রশংসা করেছেন হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন। বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সর্বোচ্চ সৌজন্য প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন বলেও মজীনার কাছে মন্তব্য করেন পঙ্কজ শরন।
এরশাদের বাসায় মজীনা: ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, সোমবার বেলা ১২টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের বাসভবনে যান। বারিধারায় এরশাদের বাসায় মজীনা পৌনে ১টা পর্যন্ত অবস্থান করেন। জাতীয় পার্টির সূত্র জানায়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপ্রবাহ নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। দুই শীর্ষনেত্রীর সংলাপের বিষয় নিয়ে জাতীয় পার্টির অবস্থান জানতে চায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত। জাতীয় পার্টির তরফ থেকে বলা হয়, সব দলকে নিয়ে সংবিধান মেনেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী। তবে নির্দলীয় সরকারের ব্যাপারে বিরোধী জোটের দাবির প্রতি জাতীয় পার্টির সমর্থন নেই বলেও মজীনাকে জানানো হয়।
এদিকে বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে গুলশান অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরনের বাসায় যান। সেখানে তিনি নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দুই নেত্রীর আলোচনার পূর্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপির অবস্থান ও পর্যবেক্ষণের কথা হাইকমিশনারকে জানান। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত শমসের মবিন হাইকমিশনারের বাসায় থাকেন।
– See more at: http://dailybartoman.com/index.php?page=details&nc=4&news_id=11314#sthash.0hkBp64z.dpuf
আনোয়ারুল করিম : নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দেশের প্রধান দুই নেত্রীর মধ্যে সংলাপ প্রক্রিয়ার মধ্যে কূটনীতিকদের তত্পরতাও থেমে নেই। বিশেষ করে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা এবং ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন সোমবার অনেকটাই ব্যস্ত দিন কাটান। এদিন ড্যান মজীনা ও পঙ্কজ শরন নিজেদের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন। এ ছাড়া সোমবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সন্ধ্যায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী ভারতীয় হাইকমিশনারের বাসভবনে যান। সেখানেও তিনি ঘণ্টাখানেক অবস্থান করেন।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বাংলাদেশের নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক গতিবিধি এবং নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সঙ্কটের মধ্যে নিজেদের মতো করে সমাধানের পথ খুঁজছে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা। এদের মধ্যে এখন স্পষ্টতই তিনটি শাখা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহমত করা পশ্চিমা ও ইউরোপীয় কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতরা একটি অংশে, ভারত একটি অংশে এবং চীনসহ ইউরোপের অন্য কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা অপর অংশে অবস্থান করছেন। সূত্র জানায়, গত কয়েকদিনের পরিস্থিতিতে মার্কিন ও ভারতের অবস্থানের ওপরই এখন অবশ্য অন্য কূটনীতিকরা নির্ভর করে আছেন। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার মধ্যে আলোচনায় আগ্রহী। তবে এ প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন হবে তা নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়দিল্লির মতভেদ রয়েছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে গতকাল এই প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির নিশ্চয়ই একটি অবস্থান রয়েছে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংবিধানের মধ্যে থেকে স্থিতিশীল সরকার কাঠামোই দেখতে চায় ভারত। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেয়া কোনো শক্তির উত্থান কখনই প্রত্যাশা করে না ভারত।
ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন সোমবার বিকালে গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনার বাসভবনে যান। বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত দুজন একসঙ্গে কথা বলেন। মজীনা ও পঙ্কজ শরনের এই বৈঠকটি কূটনৈতিক অঙ্গনে তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা গতকাল এ ব্যাপারে জানান, মজীনার দিল্লি সফর সম্পর্কে জানতেই মূলত ভারতীয় হাইকমিশনার মজীনার বাসায় যান।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা গত শুক্রবার নয়াদিল্লিতে যান। তার আগে বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। গত শুক্রবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা। তার আগে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ন্যানি্স পাওয়েলের সঙ্গে আলোচনা করেন মজীনা। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই সফর নিয়ে এরই মধ্যে ভারতে প্রতিক্রিয়া হয়েছে। কূটনৈতিক একটি সূত্র দাবি করেছে, মজীনা ‘আমন্ত্রণ’ ছাড়াই ভারত সফরে যান। তবে আমন্ত্রণ ছাড়াই মজীনা কেনই বা ভারত সফর করলেন— সে প্রশ্নও উঠেছে। মার্কিন দূতাবাসের একটি সূত্রসোমবারজানায়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ভারতীয় হাইকমিশনারের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ ফিরিয়ে আনা, সব দলের অংশগ্রহণে ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং ‘চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ’ মোকাবিলার দিকগুলো উঠে আসে। এ ব্যাপারে ভারতের পক্ষ থেকে মজীনাকে জানানো হয়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত দেখতে চায় না ভারত; বিশেষ করে সংবিধান অনুযায়ী এ দেশে যেমন সরকার পরিচালিত হবে, তেমনি নির্বাচনও হবে সংবিধানসম্মতভাবে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ভারতের এই মনোভাব সমর্থন করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও চায় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ।
ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তার কাছে এ বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই কূটনীতিক সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে একসঙ্গে বসেছেন। তবে তাদের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থায় দুই প্রধান জোটের মতপার্থক্য নিয়ে আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে উদারতা ও সহনশীলতা আশা করার কথা বলা হয়। ভারতের পক্ষ থেকে মার্কিন দূতকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে; এমন অবস্থায় দেশটির সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো অবস্থান গণতন্ত্রকে ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়, মায়ানমার এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। সঙ্কট সমাধানে ‘সর্বোচ্চ ছাড়’ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার প্রশংসা করেছেন হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন। বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সর্বোচ্চ সৌজন্য প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন বলেও মজীনার কাছে মন্তব্য করেন পঙ্কজ শরন।
এরশাদের বাসায় মজীনা: ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, সোমবার বেলা ১২টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের বাসভবনে যান। বারিধারায় এরশাদের বাসায় মজীনা পৌনে ১টা পর্যন্ত অবস্থান করেন। জাতীয় পার্টির সূত্র জানায়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপ্রবাহ নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। দুই শীর্ষনেত্রীর সংলাপের বিষয় নিয়ে জাতীয় পার্টির অবস্থান জানতে চায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত। জাতীয় পার্টির তরফ থেকে বলা হয়, সব দলকে নিয়ে সংবিধান মেনেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী। তবে নির্দলীয় সরকারের ব্যাপারে বিরোধী জোটের দাবির প্রতি জাতীয় পার্টির সমর্থন নেই বলেও মজীনাকে জানানো হয়।
এদিকে বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে গুলশান অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরনের বাসায় যান। সেখানে তিনি নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দুই নেত্রীর আলোচনার পূর্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপির অবস্থান ও পর্যবেক্ষণের কথা হাইকমিশনারকে জানান। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত শমসের মবিন হাইকমিশনারের বাসায় থাকেন।
– বর্তমান