ভূগর্ভের পানি নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য
ভূ-বিজ্ঞান মতে, পৃথিবীর তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল। তবে বিজ্ঞানীদের এক তথ্যে পুরো চিত্রটিই যেন পাল্টে যেতে বসেছে। তথ্যটা অবাক করা হতে পারে, তবে তা-ই সত্য। আর তা হলো, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ভূগর্ভে বিশাল পানির ভাণ্ডার খুঁজে পেয়েছেন। ভূপৃষ্ঠের প্রায় ৬৬০ কিলোমিটার (৪০০ মাইল) নীচে রিংউডিট নামের ছিদ্রবহুল একজাতের শিলায় এ পানি আটকে আছে। আর এ পানি দিয়ে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরকে অন্তত তিন বার কানায় কানায় ভরে দেওয়া যাবে বলে দাবি তাদের।
আমেরিকার নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-পদার্থবিদ স্টিভ জ্যাকবসেন এবং নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসমোলজিস্ট ব্র্যান্ডন স্ক্যামান্ড যৌথভাবে এ গবেষণা করেছেন। গবেষণার সমীক্ষা নিয়ে একটি প্রবন্ধও প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স নামের জার্নালে।
প্রকাশিত জার্নাল সূত্রে জানা যায়, কয়েক দশক ধরে গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা উত্তর আমেরিকার ভূগর্ভস্থ শিলায় আটকে থাকা এ পানির খোঁজ পেয়েছেন।
স্টিভ জ্যাকবসেন ও ব্র্যান্ডন স্ক্যামান্ড বলেন, আমরা পানির তিনটি রূপ অর্থাৎ তরল, বরফ এবং বাষ্পের সঙ্গে পরিচিত থাকলেও ভূগর্ভের শিলায় আটকে থাকার পানির সঙ্গে তার কোনটিরই মিল নেই। ভূগর্ভের গভীরে প্রচণ্ড চাপ এবং ২ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১০৯৩ দশমিক ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে এ পানি হাইড্রোক্সিল র্যাডিক্যাল (ওএইচ) আকারে রয়েছে।
তাদের মতে, এ পানির খোঁজ পাওয়ার সাথে সাথে পৃথিবীর পানির উৎস সংক্রান্ত আগেকার সব বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হয়ত বদলে যাবে। আগে ধারণা করা হতো, সৃষ্টির প্রথম দিকে যখন পৃথিবীর রূপান্তর ঘটছিল তখন হয়ত কোনো বরফ সমৃদ্ধ উল্কা আছড়ে পড়ায় পৃথিবীতে পানির উদ্ভব হয়েছিল। কিন্তু নতুন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে এখন ধারণা করা হচ্ছে, ভূকম্পন ও অগ্ন্যুৎপাতের মতো নানা ভৌগোলিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে ভূগর্ভের গভীর থেকে পানির নিঃসরণ ঘটেছে।
জ্যাকবসেন মনে করছেন, পৃথিবীর পুরো পানিচক্রের রহস্য পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে ব্যাপক পরিমাণ পানি থাকার কারণও বোঝা যাচ্ছে।
সূত্র : ডেইলি মেইল।