ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা রায় প্রকাশ
মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে সমুদ্রসীমা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের বিরোধ নিষ্পত্তির রায় সম্পর্কে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
পারাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতের (পিসিএ) রায়ে সমুদ্রে আনুমানিক ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার।
তিনি বলেন, এ বিজয় ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের বিজয়। এর রায় উভয় রাষ্ট্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এখন থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইলে বাংলাদেশের প্রবেশ সংরক্ষিত। আমাদের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা হলো। বাংলাদেশের জনগণ এতে লাভবান হবে।
এর আগে সোমবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক স্থায়ী সালিস আদালত (পিসিএ) এই রায় দেন এবং মামলাটির দুপক্ষ বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করেন।
নেদারল্যান্ডস-এ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ বেলাল আহমেদ রায় গ্রহণ করেন এবং ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান।
স্থায়ী সালিস আদালতের বিধান অনুযায়ী রায় হস্তান্তরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রকাশ করা যাবে না। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে রায় প্রকাশ করে।
এদিকে সোমবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বহিঃপ্রচার অণুবিভাগের মহাপরিচালক সালাউদ্দিন নোমান চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের রায় সরকারের কাছে এসেছে। এখন রায়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে হেগে স্থায়ী সালিস আদালতে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ মামলায় বাংলাদেশ ও ভারত নিজ নিজ পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ৬ মাসের মধ্যে রায় প্রদানের কথা জানান সালিস আদালত।
২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর স্থায়ী সালিস আদালতে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির মামলা করে বাংলাদেশ। এতো বছর ধরে তথ্য-প্রমাণ, দলিল, যুক্তিতর্ক পেশ করা হয়। সমুদ্রসীমা নির্ধারণে সমদূরত্বের রেখা টানার যুক্তি দেয় ভারত। এর ফলে সমুদ্রতট থেকে সীমারেখা হবে ১৬২ ডিগ্রি।
অন্যদিকে বাংলাদেশ উপকূলীয় রেখা অবতলীয় হওয়ায় ন্যায্যতার (ইক্যুইটি) ভিত্তিতে সীমারেখা টানার কথা বলে। যেখানে রেখা হবে ভূমির মূল বিন্দু থেকে সমুদ্রের দিকে ১৮০ ডিগ্রি।
উল্লেখ্য, প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বাংলাদেশের বিরোধ চলছে কয়েক যুগ ধরে। মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ ২০১২ সালে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। জার্মানীর হামবুর্গে সমুদ্র আইন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ইটলস) ২ দেশের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। বাংলাদেশ দাবি অনুযায়ী ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমুদ্রসীমার অধিকার ফিরে পায়।