ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় পাঞ্জাব রাজ্যে আম আদমি পার্টি জয় পেলে কংগ্রেস কিংবা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জন্য সুখবর হবে না। তবে দল দুটি নির্বাচনে হারলে সেই কারণে নয়, বরং এই রাজ্যে দল দুটির সামনের পথ চলা কঠিন হয়ে পড়বে।
বিজেপি এবং আকালি দল সমন্বিতভাবে লড়েও হেরে যায় এবং আম আদমি পার্টি জয় পায় তাহলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তির নেতিবাচক দিকটি প্রকাশ পাবে। ২০১৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি’র জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী মোদীর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তৈরি হয়। কিন্তু দিল্লিতে এএপি’র জয়ের পর সেই ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও ক্ষুন্ন হয়। বিহারে রাষ্ট্রীয় জনতা দল এবং জনতা দল (সংযুক্ত) এর জোট জয়লাভ করে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা এবং পুন্ডুচেরিতে বিজেপি হেরে যায়। কিন্তু এসব হার প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কাবু করতে পারেনি, কারণ বিজেপি এরপর মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা এবং আসামে জয় পায়। কিন্তু পাঞ্জাবে এবং উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে বিজেপি হারলে তার দলের অভ্যন্তরে কোন্দলের সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে নোট বাতিল ইস্যুটি চলে আসবে। মনে করা হবে, নোট বাতিল করার কারণেই বিজেপি হেরেছে। আর এটা প্রধানমন্ত্রী মোদী কিংবা তার দলের জন্য সুখকর হবে না।
কংগ্রেসের জন্যও এএপি’র জয় বিপজ্জনক হবে। উত্তর দিকের হারানো রাজ্য যদি কংগ্রেস ফিরে না পায় তাহলে তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে। এই হার এড়াতে দলটি অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট গড়ে তুলেছে। এরপরও যদি হেরে যায় তাহলে তারা বড় দল হিসেবে পিছিয়ে যাবে। এই জোট গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কংগ্রেসের অনেকেই আশা করছেন, প্রিয়াঙ্গা গান্ধী তাদের আশার আলো দেখাতে পারবেন। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভয় ছিল যে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী মোদী স্রোতে নিজেদের আসন হারাতে পারেন। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর দুই সপ্তাহের প্রচারণার ফলে সেবার সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর আসন রক্ষা পায়। পাঞ্জাবে অনেক কারণে হারতে পারে কংগ্রেস। বিশেষ করে দলটি অনেক দেরিতে তাদের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছে। ফলে ভোটারদের মধ্যে দলটির কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ভারতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে এএপি তাদের অবস্থান শক্ত করছে। দিল্লি থেকে পাঞ্জাবে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে। গোয়ায়ও দলটি তাদের অবস্থান গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এর ফলে দেশে কংগ্রেস নেতা এবং কর্মীদের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়বে। এএপি প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল ইতোমধ্যে দিল্লি পৌরসভার নির্বাচনে জয়ের পথ তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আগামী দুই মাসের মধ্যেই সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।