ভারতকে ইরানের কড়া হুঁশিয়ারি

20/09/2020 5:34 pmViews: 15

ভারতকে ইরানের কড়া হুঁশিয়ারি

ভারতকে ইরানের কড়া হুঁশিয়ারি – ছবি : সংগৃহীত


ইরানের চাবাহার বন্দরে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ না করায় ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। পাশাপাশি, ইরান থেকে তেল আমদানি কমালে ভারত সে দেশ থেকে যে আর্থিক সুবিধে পেয়ে থাকে, তা-ও বন্ধ করে দেয়া হবে। মঙ্গলবার একটি আলোচনাসভায় এই কথা জানালেন, ভারতে নিযুক্ত ইরানের উপ-রাষ্ট্রদূত মাসুদ রেজভানিয়ান রাহাঘি।

ইরানের চাবাহার বন্দর ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের সঙ্গে খারাপ কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি, সেই দেশের অভ্যন্তরীণ টালমাটাল পরিস্থিতির জন্য করাচিসহ পাক বন্দরগুলো ভারতের জন্য আর নিরাপদ নয়। অথচ, আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়া, পারস্য উপসাগরে ভারতের পণ্য নিয়ে যাওয়া বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য একটি জরুরি বিষয়। সেই কারণেই ২০১৬ সালে ভারত-ইরান-আফগানিস্তান মিলে সমুদ্রবন্দর হিসেবে চাবাহারকে ব্যবহার করার চুক্তি স্বাক্ষর করে। পাশাপাশি, রাখা হয়েছিল যাত্রী পরিবহণের বিষয়টিও। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ করছে না ভারত, এমনটাই দাবি ইরানি উপ রাষ্ট্রদূতের।

ইরানের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্য-সম্পর্ক বন্ধ করতে আমেরিকা চাপ বাড়াচ্ছে সব মহলেই। ৪ নভেম্বরের মধ্যে ইরানের থেকে তেল আমদানি বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি ইরানের বন্দরগুলোতেও পণ্য পরিবহণ করা যাবে না। নয়াদিল্লিকে ইতিমধ্যেই এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। না মানলে ভারতকে শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে। তা নিয়েও সরব হয়েছে ইরান। ভারত এই মুহূর্তে ইরান থেকে যে পরিমাণ তেল আমদানি করে, তার দশ শতাংশ কমানোও তেহরানের পক্ষে মেনে নেয়া অসম্ভব। সেক্ষেত্রে তেলের দামে ভারত যে বিশেষ সুবিধে পেয়ে থাকে, তা সরিয়ে নেয়া হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানি উপ-রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

ভারতের জন্য এই মুহূর্তে ইরান তৃতীয় বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ। ইরাক ও সৌদি আরবের পরেই। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়া ও পারস্য উপসাগর অঞ্চলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান।

পাশ্চাত্যের সাথে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল। বার্লিন সফররত লি কেকিয়াংয়ের সাথে সোমবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অ্যাঞ্জেলা মারকেল বলেন, অনেক আলোচনার পর ইরানের সাথে যে পরমাণু সমঝোতা সই হয়েছে তাতে সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষিত হয়েছে। এ সময় চীনা প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সমঝোতা ভেঙে পড়লে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।

মারকেল আরো বলেন, পরমাণু সমঝোতার প্রতি আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা মনে করছি এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি। সমঝোতার আগে ইরানের সাথে হয়তো আরো আলোচনা করা যেত; কিন্তু তারপরও আমি মনে করি এই সমঝোতা বহাল রাখাই ভালো।
তবে একই সাথে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ইরানের সাথে ব্যবসা করলে মার্কিন সরকার যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছে তা থেকে বাঁচাতে বার্লিন তেমন কিছুই করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে নিজেদের দায়িত্বে ইরানের সাথে বাণিজ্য করতে হবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। এর আগে সোমবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং ইরানের পরমাণু সমঝোতা বহাল রাখার জন্য বেইজিং জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮ মে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে তার দেশকে একতরফাভাবে বের করে নেন। সেই সাথে তেহরানের ওপর পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আগের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহালের ঘোষণা দিয়ে বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারী দেশ ও কোম্পানিগুলোকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় ফেলবে ওয়াশিংটন।

Leave a Reply