ভাবগানে মুখরিত ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ী
শরীফ বিশ্বাস, কুষ্টিয়া: ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের পাগল, মানুষ …। এমন সব ভাবগানে মুখরিত কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়ী।
না হিন্দু, না মুসলিম- ফকির লালন শাহের মানবতার ধর্মে বিশ্বাসী অসংখ্য বাউলদের এমন ভাবগানের ধ্বনিতে প্রকম্পিত সাঁইজির ধাম। আর এই রকম হাজারো বাউল আর দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয় ঈদের দিন পয়লা কার্ত্তিক থেকে।
কারণ এই পয়লা কার্ত্তিকেই যে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ দেহ ত্যাগ করেন। ১২৩তম মৃত্যু বার্ষিকী (তিরোধান দিবস)। তাই গানে আর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন অসংখ্য বাউল সাধু, ভক্তানুরাগীরা।
১২৩তম এই তিরোধান দিবসে প্রতিবারের ন্যায় এবারও ৫দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে লালন একাডেমী। ১৬অক্টোবর (পয়লা কার্ত্তিক) ঈদের দিন হওয়ায় দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গতা দেয়া সম্ভব হয়নি। শুধুমাত্র বাউল সাধুরা তাদের সাঁইজিকে আপন মনে স্মরণ করে নানাভাবে, নানা ভঙ্গিতে।
তবে লালন স্মরণোৎসব এবার ঈদের দিনে হলেও বাউল সাধু ভক্তদের মিলন মেলা দেখতে আসেন হাজারো দর্শনার্থী। বৃহস্পতিবার (১৭অক্টোবর) স্মরণোৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি থেকে স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করবেন বলে নিশ্চিত করেছে লালন একাডেমী।
এ ৫দিনের অনুষ্ঠানে থাকছে লালন মঞ্চে লালন সঙ্গীতের আসর আর কালী নদের পাড়ে গ্রামীণ মেলার আয়োজন।
তবে ৫দিনব্যাপী অনুষ্ঠান হলেও বাউলদের অনুষ্ঠান মূলত: শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার ।
বুধবার গভীর রাতে অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাউলদের আচার আর বৃহস্পতিবার বাল্যসেবা এবং দুপুরে পূর্ণ সেবার মধ্য দিয়েই শেষ হচ্ছে তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান।
আগামী ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ভক্তানুরাগীরা সাঁইজির ধামে এসে যার যার মত সাঁইজিকে স্মরণ করবেন। আর দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত থাকবে আখড়াবাড়ী।