ভাদ্রের বন্যা নিয়ে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী

11/08/2020 4:07 pmViews: 5

দেশে কয়েক দফা বন্যার পর ভাদ্র মাসে আবার বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে সতর্ক হয়ে সবাইকে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সোমবার গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভায় অংশ নিয়ে এসব নির্দেশনা দেন। এ সময় সচিবালয় প্রান্তে ছয়জন মন্ত্রী সংযুক্ত ছিলেন।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিসভা বৈঠকে বন্যা ও পুনর্বাসন কর্মসূচি নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। তবে আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস আরও বৃষ্টি হতে পারে। ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, পুনর্বাসন কার্যক্রমে একটা বড় অঙ্কের টাকা ধরা আছে। কোথাও নদীর বাঁধ ভেঙে গেলে তাড়াতাড়ি মেরামত করতে এ টাকা ব্যয় করা হবে। সেই বিষয়ে বিশেষ জোরও দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রোপা আমনের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে বলেছেন। রোপা আমনের উৎপাদন ঠিকভাবে হলে খাদ্য ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা কমবে। সবাইকে মাস্ক পরার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, করোনার মধ্যে ঘরের বাইরে সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে মাঠপ্রশাসনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, মানুষ পকেটে মাস্ক রাখে; কিন্তু পরে না। করোনাভাইরাস সম্পর্কে অনেক মানুষ সচেতন নন। আবার অনেকের সচেতনতা একটু কমেও গেছে। কিন্তু সেটা আরও বাড়াতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, মাস্ক না পরার কারণে বাস-লঞ্চ ও বাজারে লোকজনকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। এ শাস্তি দেয়ার ঘটনা প্রচার করলে সাধারণ মানুষ আরও সচেতন হবে। সবাই যাতে মাস্ক ব্যবহার করে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আরও প্রচার চালানো হবে। তিনি বলেন, বিশেষ করে তথ্য মন্ত্রণালয়কে আরও ব্যাপক প্রচারের জন্য বলা হয়েছে।

চলচ্চিত্রশিল্পীদের সহায়তায় ট্রাস্ট হচ্ছে : পেশাগত কাজ করতে অক্ষম ও অসচ্ছল চলচ্চিত্রশিল্পীদের সহায়তায় ট্রাস্ট গঠন করছে সরকার। এজন্য ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০২০’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পীদের কল্যাণসাধনের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট নামে একটি ট্রাস্ট স্থাপনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী তথ্য মন্ত্রণালয় আইনের খসড়া উপস্থাপন করেছে।

নেপালকে রেল ট্রানজিট দেয়া হচ্ছে : মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে স্বাক্ষরের লক্ষ্যে একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। ১৯৭৬ সালে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক ট্রানজিট চুক্তির আলোকে নেপাল অনুরোধ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহনপুর ও ভারতের সিঙ্গাবাদের মধ্যকার রেলপথে তাদের ট্রানজিট সুবিধা দিতে। চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে রোহানপুর থেকে সিঙ্গাবাদ হয়ে নেপালের বীরগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথে পণ্য পরিবহন সুবিধা চালু হবে। আমাদের সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে নেপালের আগ্রহ নিয়েও আলোচনা চলছে।

কাস্টমস বিষয়ে সৌদির সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে : বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরের লক্ষ্যে একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ চুক্তি হলে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বাড়বে। দুই দেশের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ সুসংহত হবে। দুই দেশে অনলাইনে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবে। এটি পণ্যের অবৈধ বাণিজ্য ও চোরাচালান প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রাখবে। গোয়েন্দা কার্যক্রমের বিষয়ে দুই দেশ পরস্পরকে সাহায্য করতে পারবে। আমাদের দেশের কাস্টম বিভাগের দক্ষতা বাড়াতেও সৌদি আরব সহায়তা করবে।

মালদ্বীপ ও চেক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে চুক্তি : বাংলাদেশের সঙ্গে মালদ্বীপ ও চেক প্রজাতন্ত্রের মধ্যে দ্বৈত করারোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তির খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ৩৫-৩৬টি দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বৈত করারোপ রহিতকরণ সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে। এটার জন্য আমাদের পারস্পারিক বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার পথ প্রশস্ত হবে। ২০১৯ সালের ২২ থেকে ২৬ এপ্রিল ঢাকায় মালদ্বীপের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়। তখন দ্বৈত করারোপ পরিহার করার লক্ষ্যে চুক্তি করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়। অন্য দেশের সঙ্গে যেভাবে দ্বৈত করারোপ পরিহারের বিষয়ে যে চুক্তি রয়েছে, সেরকমই চুক্তি করা হবে। বাংলাদেশ ও চেক প্রজাতন্ত্রের মধ্যে দ্বৈত করারোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply