ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধিতে ভারত

27/05/2015 1:43 pmViews: 4

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধিতে ভারত

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধিতে ভারত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব নেয়ার বর্ষপূর্তিতে তার অর্জন ও ব্যর্থতার হিসাব-নিকাশ চলছে। ব্যর্থতা যা-ই থাক, নিজ মেয়াদে মোদি দেশের অর্থনীতিকে অনেক দূরই এগিয়ে নিয়েছেন, তা একবাক্যে সবাই স্বীকার করবেন। ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের সবচেয়ে এগিয়ে থাকাই এর অন্যতম প্রমাণ। খবর নিক্কেই ও সিএনএন।

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির একসময়ের অন্যতম চালক চীনে এখন শ্লথগতি চলছে। এ অঞ্চলের অন্য দুই দেশ রাশিয়া ও ব্রাজিলও সঙ্গিন অবস্থায় রয়েছে। এর পুরো বিপরীত অবস্থানে রয়েছে ভারত। জানুয়ারি-মার্চসহ তিন প্রান্তিক ধরে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে টপকে গেছে ভারত।

মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির সমন্বিত হিসাবে দেশে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ভারত সরকার। অথচ এক বছর আগে দেশটির প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। আগামী শুক্রবার এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করবে দেশটির সরকার। অর্থনীতিবিদদের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে ভারতের জিডিপি প্রসারিত হবে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ভারতের জিডিপিতে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে ভারত সরকার। অন্যদিকে চীন জানিয়েছে, তাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ, যা ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকেই জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে এ দুই দেশের অবস্থান বদল হয়। মূলত চলতি বছরের শুরুর দিকে দেশের অর্থনীতির আকার যাচাইয়ে নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করার পরই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

দায়িত্ব নেয়ার পর অর্থনীতি এগিয়ে নিতে বেশ অনুকূল পরিবেশ পেয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। মোদি ক্ষমতা গ্রহণের পূর্ববর্তী বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ছিল ১০০ ডলার। চলতি বছর শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তা ৫০ ডলারে নেমে এসেছে। প্রয়োজনীয় জ্বালানির ৮০ শতাংশই আমদানিকারক ভারতের জন্য এটি খুবই ইতিবাচক। তেলের দরপতনের সুবাদে বাজেট ঘাটতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

অবশ্য ভারতের অর্থনীতির সব সূচকই যে গতিশীল অবস্থায় রয়েছে, তা কিন্তু নয়। ২০১৪ অর্থবছরে ভারতে ইস্পাত ও বিদ্যুত্ উত্পাদন বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি। তবে এ সময় গাড়ি বিক্রি বেড়েছে মাত্র ৪ শতাংশ। এছাড়া শিল্প উত্পাদন সূচকের অন্যতম উপাদান ভোগ্যপণ্য খাত ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। এর পরও আশাবাদী অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জনে দেশ খুবই সম্ভাবনাময় অবস্থানে রয়েছে। অবশ্য দেশের গ্রামীণ পর্যায়ের অর্থনীতি থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা না পাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি।

অন্যদিকে ব্রাজিলের প্রায় কোণঠাসা অর্থনীতি জানুয়ারি-মার্চে টানা চার প্রান্তিকের মতো সংকুচিত হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রাজিলিয়ান ইনস্টিটিউট অব জিওগ্রাফি অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকসের প্রকাশিত তথ্যে এ খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ভোগ্যপণ্যের দাম কম থাকায় রফতানিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেসঙ্গে বিদেশী বিনিয়োগও বৃদ্ধির কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না, বাড়ছে মূল্যস্ফীতিও। বিপরীতে মোদির দায়িত্ব নেয়াকালে ভারতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ, বর্তমানে তা ৪ দশমিক ৮৭তে নেমে এসেছে।

ইকুইটি বাজারের দিক থেকে ভারত কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। তেলের দরপতনের কারণে দেরিতে হলেও রাশিয়া ও ব্রাজিলের শেয়ারবাজার আবার চাঙ্গা হয়ে উঠছে। সে অনুযায়ী ভারতের শেয়ারবাজার তেমন এগোচ্ছে না এবং এখানে অর্থনৈতিক ভিত্তিগত অগ্রগতির কোনো প্রভাব পড়ছে না। অবশ্য অনেক বিনিয়োগকারী আশা করছেন অল্প সময়ের মধ্যেই ভারতের শেয়ারবাজারে আবার প্রাণ ফিরে আসবে। এর সুবাদে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরেক দফা সুদের হার কর্তনের সুযোগ পাবে। গত জানুয়ারিতে ভারতের সেনসেক্স স্টক ইনডেক্সটি রেকর্ড ২৯ হাজার ৬৮১ পয়েন্টে ওঠে। মার্কিন আর্থিকসেবা দাতা কোম্পানি সিটিগ্রুপ প্রত্যাশা করছে, ২০১৬ সালের জুন নাগাদ সূচকটি ৩৫ হাজার পয়েন্টে লেনদেন হবে।

Leave a Reply