ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সবুজ মাল্টায় রঙিন হচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

09/10/2021 2:16 pmViews: 8
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সবুজ মাল্টায় রঙিন হচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন
অনুকূল আবহাওয়া ও উপযোগী পরিবেশে থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে মাল্টার চাষ। এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে চাষিদের মুখেও হাসি ফুটেছে। চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৭ কোটি টাকার মাল্টা বিক্রি হবে বলে আশা করছে কৃষি সম্প্রধারণ অধিদফতর। প্রতিবছরই চাষিরা মাল্টার নতুন নতুন বাগান করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৩৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টার চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হেক্টর, সরাইল উপজেলায় ২ হেক্টর, কসবা উপজেলায় ৩৫ হেক্টর, নবীনগরে ১০ হেক্টর, বাঞ্ছারাপুরে ৫ হেক্টর, নাসিরনগরে ১ হেক্টর, আখাউড়ায় ১৫ হেক্টর, আশুগঞ্জে ১ হেক্টর ও বিজয়নগর উপজেলায় ৬৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোট-বড় মিলিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছে ১ হাজার ৮৮০টি মাল্টার বাগান। এর মধ্যে বিজয়নগর ৭৫৪টি, কসবায় ৬৬০টি ও আখাউড়ায় ৪৬৬টি বাগান রয়েছে।
জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাল্টার আবাদ শুরু হয়। ফলন ভালো হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে মাল্টা চাষের পরিধি। তবে এখানে বারি-১ জাতের মাল্টার চাষই বেশি হয়। বিজয়নগর উপজেলায় বাণ্যিজিকভাবে মাল্টার চাষ শুরু হয় একই বছরে। বর্তমানে উপজেলার পাহাড়পুর, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর, সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের গ্রামের বাড়ির আঙিনা ও সমতল ভূমিতে মাল্টার বাগান করা হয়েছে। ৭৫৪টি বাগানে গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ডালে ডালে ঝুলছে সবুজ মাল্টা।
উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের হাটখোলা গ্রামের মাল্টা চাষি সবুজ মিয়া বলেন, চার বছর আগে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা এক বিঘা জমিতে ৬০টি চার লাগিয়ে মাল্টা চাষ শুরু করি। শুরুতে আশানুরূপ ফলন না হলেও এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। কীটনাশক ছাড়াই বিষমুক্ত গাছে মাল্টার ভালো ফলন হয়েছে। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকার ও দর্শনার্থীরা বাগানে এসে মাল্টা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাগানে থেকে ১০০-১৩০ টাকা কেজি দরে মাল্টা বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের চাষি সোহাগ ভূঁইয়া জানান, তিনি ৬০ শতাংশ জমিতে মাল্টার বাগান করেছেন। পাঁচ বছর আগে ৬০টি মাল্টা চারা দিয়ে বাগান শুরু করলেও বর্তমানে তারা বাগানে ১৬০টি চারা রয়েছে। সবগুলো গাছে ভালো ফলন ধরছে। ফলন ভালো হওয়ায় অধিক লাভের আশা করছেন তিনি।
বিজয়নগর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাদিউল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি। অল্প খরচে লাভবান হওয়ায় প্রতিবছরই মাল্টা চাষে মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপপরিচালক রবিউল হক মজুমদার বলেন, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৩৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টা উৎপাদন হবে। আশা করছি এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৭ কোটি টাকার মাল্টা বিক্রি হবে। তিনি বলেন, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। মাল্টা চাষ জনপ্রিয় করে তুলতে বিভিন্ন সময় প্রদর্শনীর আয়োজন করি।

Leave a Reply