ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবরোধ ভাঙচুর-রেল যোগাযোগ ব্ন্ধ হরতাল

12/01/2016 3:48 pmViews: 17
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবরোধ ভাঙচুর-রেল যোগাযোগ ব্ন্ধ, কাল হরতাল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ী-পুলিশের সঙ্গে মাদ্রাসাছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত মাদ্রাসাছাত্র মাসুদুর রহমান মারা গেছেন। সোমবার দিনগত রাত ২টায় ওই ছাত্রের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। নিহত মাসুদুর রহমান পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের ইলিয়াস আহম্মেদের ছেলে। সে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার ৮ম শ্রণির ছাত্র। তার লাশ জেলা সদর হাসপাতালে রাখা আছে।

এদিকে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার ভোর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠে পুরো শহর। ভাঙচুর করা হয়েছে শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুর ও পয়েন্টস পুড়ে ফেলার পর থেকে ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রামের রেল যোগযোগ বন্ধ রয়েছে। হামলা হয়েছে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতেও। এছাড়া ওই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে মাদ্রাসাছাত্ররা ও জামিয়া ইউনুছিয়া কর্তৃপক্ষ।

অপরদিকে সকাল থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অঘোষিত হরতাল-অবরোধ চলছে। বিভিন্নস্থানে মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের প্রধান এলাকা অচল করে রেখেছে মাদ্রাছাত্ররা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরো শহরে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার রাতে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও পুলিশের সংঘর্ষের পর রাত পৌনে ২টায়  হাফেজ মাসুদুর রহমান (২০) নামের ওই মাদ্রাসা ছাত্রকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে তার সহকর্মীরা। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক মাইনুল হক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসক জানায়, নিহত ছাত্রের শরীরে আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও তার পেটে-পিঠে চাপ খাওয়া দাগ রয়েছে। মাদ্রাসা ছাত্ররা জানায়, সংঘর্ষের সময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় সে আহত হয়। হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভোরে মাসুদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার পর পরই  মাদ্রাসার শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। শত শত মাদ্রাসা শিক্ষক-ছাত্র হাতে লাঠি নিয়ে শহরের টিএ রোড, কুমারশীলের মোড়, লোকনাথ ট্যাঙ্কের পাড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা সড়কের উপর কয়েকটি তোরণ ভাঙচুর করে। মুহূর্তে মধ্যে পুরো শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সমস্ত দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় শহরে যান চলাচল। বিক্ষুব্ধরা ওস্তাদ আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, প্রশিকা অফিস, রেলওয়ে স্টেশন, আওয়ামীলীগ কার্যালয়, শিল্পকলা একাডেমী, কয়েকটি সাংস্কৃকি সংগঠন, একটি স্কুলেও ভাঙচুর করা হয়েছে।

এ ঘটনার পর সকাল থেকে শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সকাল ১০টার পর মাদ্রাসাছাত্ররা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স, ব্যাংক এশিয়া, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে স্টেজ, প্যান্ডেল, শহরের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামীলীগ নেতাদের পোস্টার, ফেস্টুন ভাঙচুর করেছে।

রেলস্টেশেনে হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়, ফ্লেসপ্লেইট ভেঙে ফেলায় ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট-চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া রেলস্টেশনে আটকা পড়েছে কয়েকটি ট্রেন।

পুলিশ বিজিবি মোতায়েন থাকার পরও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, শিল্পকলা একাডেমী, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ভাঙচুর করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঢাকার সাথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আগামীকাল সকাল সন্ধ্যা হরতাল আহবান করে শহরে মাইকিং চলছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার এএসপি তাপস রঞ্জন ঘোষ জানান, শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবিও মোতায়েন করা হয়েছে।

Leave a Reply