বিসমিল্লাহ গ্রুপের এমডিসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ১১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বুধবার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়া হয়। দুদকের একটি বিশ্বস্ত সূত্রে বৃহস্পতিবার এ কথা জানা গেছে। শিগগিরই তা আদালতে দাখিল করা হবে।
যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেয়া হয়েছে তারা হলেন- বিসমিল্লাহ গ্রুপের মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান চৌধুরী, গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী মিসেস নওরীন হাসিব, পরিচালক ও খাজা সোলেমানের মাতা বেগম সারোয়ার জাহান, গ্রুপের পরিচালক আবিদা হাসিব, নাহিদ আনোয়ার খান, খন্দকার মো মইনুদ্দিন ইশহাক, গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মোহাম্মদ আবুল হোসেন চৌধুরী, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি ও অথরাইজড সিগনেটরি) আকবর আজিজ মুতাক্কি, ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার ও অথরাইজড সিগনেটরি) রিয়াজউদ্দিন আহম্মেদ, নেটওয়ার্ক ফ্রেইট সিস্টেম লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো আক্তার হোসেন। অন্যদিকে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা হলেন ইস্কাটন শাখার প্রাক্তন শাখা ব্যবস্থাপক মো. আসলামুল হক, প্রাক্তন ডেপুটি ম্যানেজার এ এস এম হাসানুল কবীর, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম, জুনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মান্নাতুল মাওলা। তবে মামলার সব আসামিই বর্তমানে দুবাই, লন্ডন, মালয়েশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ইস্কাটন শাখার ব্যবস্থাপক মো. নকিবুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় খাজা সোলেমান চৌধুরীসহ ১২ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের জন্য পরবর্তী সময়ে দুদকে স্থানান্তর করা হয়।
পরে দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান মামলাটি তদন্ত করে বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও শাহ্জালাল ব্যাংকের ১৪ কর্মকর্তাকে আসামি হিসেবে সুপারিশ করে গত আগস্টে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করেন।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ও গ্রাহক মেসার্স বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেডের মালিক খাজা সোলেমান চৌধুরীসহ আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ভুয়া রপ্তানি বিলের বিপরীতে এফডিবিপি ও ব্যাক টু ব্যাক এলসিতে ৯৭ কোটি ৫৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন, যার ফলে মুনাফাসহ ব্যাংকের মোট ক্ষতি হয়েছে ১১০ কোটি ৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে- অর্থ আত্মসাতে আসামিদের প্রত্যক্ষ যোগসাজশ ছিল। এদের মধ্যে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে উক্ত কোম্পানির মালামাল রপ্তানি না করা সত্ত্বেও ব্যাংকে দাখিলকৃত ভুয়া রপ্তানি বিল ও জাল কাগজপত্রের বিপরীতে অর্থ ছাড় করেছেন।
মামলার তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কমিশন ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪০৯/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে।