‘বিরোধী জোটকে বিদেশী খুনের ঘটনায় জড়ানোর অপপ্রচারে সরকার’
‘বিরোধী জোটকে বিদেশী খুনের ঘটনায় জড়ানোর অপপ্রচারে সরকার’

দুই বিদেশী খুনের ঘটনায় বিরোধী জোটকে জড়িয়ে সরকার অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি ইতালি ও জাপানি নাগরিকের নৃশংস, ঘৃণ্য খুনের পরপরই সরকার সুষ্ঠু তদন্ত না করেই বিরোধী দলকে ঘটনাগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত করবার জন্য অপপ্রচার শুরু করেছে। বিরোধী দল ও মতকে দমন করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা থেকে জনগণের ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাইছে সরকার। তিনি বলেন, বিদেশী নাগরিকসহ সম্প্রতি সংঘটিত ঘৃণ্য হত্যাকা-গুলোর সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা বিদেশী নাগরিকদের ঘৃণ্য হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। অবিলম্বে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছি। সরকার বরাবরের মতোই তাদের ব্যর্থতা ঢাকবার জন্য, ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে বিরোধী দল ও মতকে দমন করতে চাইছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অভিযোগ করেন, ইতিমধ্যে বিরোধী নেতাদের হয়রানি ও নির্যাতনের মাত্রা বাড়ানো হয়েছে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামসহ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেরুল হক সাবুসহ যশোরের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি ইসমাইল, রংপুর মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুল হক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাশেদুন্নবী এবং বগুড়া জেলা যুবদল সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকা-ের ঘটনায় কোন সুষ্ঠু তদন্ত না করে বিএনপিকে দোষারোপ করে দেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি ফেরানোর উদ্দেশ্যেই এটা করা হচ্ছে। দলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ অসুস্থ দাবি করে কারাগার থেকে হাসপাতালে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন কারাবন্দি রিজভী আহমেদ অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু তাকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেয়া হয়েছে। এটা নির্যাতন ছাড়া কিছু নয়। আমরা অবিলম্বে তাকে পিজি হাসপাতালে ফিরিয়ে নিয়ে সুষ্ঠু চিকিৎসা এবং মুক্তি দেয়ার আহবান জানাচ্ছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে যে অসহনীয় রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না সরকার। গণতন্ত্রের সকল পথরুদ্ধ করে একদলীয় শাসন পোক্ত করবার এই অপচেষ্টা বাংলাদেশকে ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যা পুরো জাতিকে অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা ও গভীর সংকটে ফেলে দিচ্ছে। আমরা বারবার এই অবস্থার নিরসনের জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও সহনশীল রাজনীতির আহবান জানিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের তরফ থেকে কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। উল্টো মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, নির্যাতনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্রের সকল পথকে রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা অবিলম্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামসহ সকল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দাবি করছি।