বিমানবন্দরে জব্দ গরুর একটির মৃত্যু, ১৭টি কোয়ারেন্টিনে
নিষিদ্ধ থাকার পরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধভাবে আমদানি করা ব্রাহমা জাতের ১৭টি গরু সাভার ডেইরি ফার্মের ‘কোয়ারেন্টিনে’ রাখা হয়েছে। গরুগুলোকে প্রাথমিকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। ১৮টি গরু আনা হলেও একটি গরু মারা যায় বলে বুধবার সন্ধ্যায় নয়া দিগন্তকে নিশ্চিত করেছেন সাভার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক এস এম আওয়াল হক।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে ১৮টি গরু। তবে বাংলাদেশে ব্রাহমা জাতের গরু আমদানির অনুমতি না থাকায় গরুগুলো জব্দ করে ঢাকা কাস্টম হাউস।
সাভার ডেইরি ফার্মের সূত্রে জানা যায়, আমেরিকা থেকে আনা ১৮টি গরুর মধ্যে ১৭টি গরু ডেইরি ফার্মের ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি গরু সাভারে আনার আগেই বাক্সের ভেতর মারা যায় বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। মৃত্যু গরুটি ডেইরি ফার্মের ভেতরে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। আর পানির মধ্যে বালু ফেলে জায়গাগুলো সমান করে জীবিত গরুগুলোকে বিচরনের ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া গরুগুলো লালন-পালনের জন্য ডেইরি ফার্মের লোকজনের পাশাপাশি সাদেক অ্যাগ্রোর পক্ষেও কয়েকজন লোক সেখানে অবস্থান করছেন।
সাভার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক এস এম আওয়াল হক বলেন, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে ব্রাহমা জাতের গরুগুলো। এই জাতের গরু আমদানির অনুমতি না থাকায় বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি আমদানি কারকরা। ফলে গরুগুলো জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। পরে প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের মাধ্যমে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন করার জন্য সাভার ডেইরি ফার্মে পাঠানো হয়।
তিনি আরো বলেন, মূলত ব্রাহমা জাতের গরুগুলো গোশতের জন্য উপযোগী। কিন্তু আমরা গোশতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশে ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ রয়েছে। সাদেক এগ্রো গরুগুলো বাংলাদেশে আনার জন্য আবেদন করলেও অধিদপতর কোনো অনুমোদন দেয়নি। কিন্তু জালালাবাদ কোম্পানির মালিক ও বাংলাদেশ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ ইমরানের মালিকানাধীন সাদেক অ্যাগ্রো সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করেই অনাপত্তি সনদ ছাড়া এসব গরু আমদানি করেছে। সরকারিভাবে এটি নিষিদ্ধ থাকায় সম্প্রতি এনটিআরসির ন্যাশনাল রেগুলেটরি কমিটির মিটিংয়েও সাদেক অ্যাগ্রোর আবেদনটি নাকচ করে দেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, গত মার্চ মাসেও বৈধ অনুমোদন না নিয়ে রাজধানীর ক্ষিলক্ষেত এলাকার সান ডেইরির মালিক মো: জিসান ৩০টি গরু আমদানি করেছিলেন। তাদের অনাপত্তি সনদ থাকলেও মিথ্যা তথ্য ছিল। সেখানে হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান লেখা থাকলেও আমদানি করা হয়েছিল ব্রাহমা। পরে তারা ভুল শিকার করে জরিমানা দিয়ে গুরুগুলো নেয়ার জন্য আদালতে মামলা করে। আদালতের রায়ে পরে তারা গরুগুলো নিয়ে যায়।
সাভার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক এস এম আওয়াল হক জানান, ব্রাহমা গরুগুলো মূলত বীজের জন্য। এগুলো ছোট সাইজের একটির মূল্য পাঁচ লাখ টকা। আর বড় সাইজের একটি ব্রাহমা গরুর দাম ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত।