বিদ্যুত্ নয়, আলোর মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তর করবে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ
আলোক-কম্পিউটিং নিয়ে গবেষণা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের গবেষকরা বিদ্যুতের বদলে আলোর মাধ্যমে কম্পিউটার পরিচালনাকেই ভবিষ্যতের কম্পিউটিং প্রবণতা হিসেবে মনে করছেন। এই গবেষণায় এবারে উন্মোচিত হয়েছে নতুন দিগন্ত। একদল গবেষক এমন একটি মাইক্রোপ্রসেসর চিপ উদ্ভাবন করেছেন, যেটি বিদ্যুতের বদলে আলো ব্যবহার করে অত্যন্ত কম শক্তি খরচ করেই তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম।
এই চিপের তথ্য স্থানান্তরের গতি প্রচলিত চিপগুলোর চাইতে অনেক বেশি। প্রচলিত কম্পিউটিং সিস্টেমের চাইতে আরও বেশি দ্রুত ও শক্তিশালী কম্পিউটিং সিস্টেম ও নেটওয়ার্ক অবকাঠামো গড়ে তুলতে এই চিপ ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছেন গবেষকরা। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো বোলডারের সহকারী অধ্যাপক মিলোস পপোভিচের নেতৃত্বে একটি দল ম্যাসাচুসেট ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক রাজীব রামের নেতৃত্বাধীন আরেকটি গবেষক দলের সাথে যৌথভাবে এই চিপ উদ্ভাবন করেছে।
এই উদ্ভাবন সম্পর্কে পপোভিচ বলেন, ‘কম্পিউটিং ও নেটওয়ার্কিং চিপ আর্কিটেকচারে আলো-চালিত ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের ব্যবহার এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে সক্ষম। এটি আসলে সব ধরনের কম্পিউটিং ডিভাইসেই আমূলক পরিবর্তন নিয়ে আসবে এবং এই প্রযুক্তির আগমনের কথা মাথায় রেখে অনেকেই কাজ শুরু করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আলোক-কম্পিউটিংয়ে প্রচলিত কম্পিউটিংয়ের তুলনায় দ্রুততর গতিতে তথ্য স্থানান্তর করা যায়। আবার একটি চিপের মাধ্যমেই বিপুল ব্যান্ডউইথ সংযোজন করা সম্ভব।’ এই গবেষক দল যে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ তৈরি করেছেন, সেটি প্রতি বর্গমিলিমিটার আকারের চিপে সেকেন্ডে ৩০০ গিগাবিট তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম। এই গতি প্রচলিত বৈদ্যুতিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপগুলোর তুলনায় ১০ থেকে ৫০ গুণ বেশি।
প্রথমবারের মতো তৈরি এই আলোক-চিপে ব্যবহার করা হয়েছে ৮৫০টি অপটিক্যাল ইনপুট/আউটপুট কম্পোনেন্ট। নতুন এই চিপকে কম্পিউটিংয়ের এক নতুন মাইলফলক হিসেবেই মনে করছেন গবেষকরা। তাদের একজন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের সহযোগী অধ্যাপক ভ্লাদিমির স্টোজানোভিচ বলেন, ‘এটি একটি মাইলফলক। এটি প্রথম চিপ যা আলো দ্বারা পরিচালিত এবং তা বহির্বিশ্বের সাথে সফলভাবে যোগাযোগও করতে সক্ষম। এটি কম্পিউটিংকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাবে।’