বিতর্কিতদের মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ
ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিতর্কিতদের মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ৷ বর্তমানের সব সাংসদ মনোনয়ন পাবেন, এমন কথা নেই৷ মনোনয়ন পেতে জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে হবে৷ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ জানান এ তথ্য৷
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে৷ কিন্তু সরকারের চার বছর শেষে পঞ্চম বছরে এসে আওয়ামী লীগ এখন নিশ্চিত যে, তাদের সেই জনপ্রিয়তা এখন আর নেই৷ বিশেষ করে সম্প্রতি পাঁচটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ভরাডুবি তাদের হতাশ করেছে৷ নির্বাচনে পরাজয়ের পর আওয়ামী লীগ কিছু কিছু কারণও নির্ধারণ করেছে৷ এর মধ্যে অন্যতম হলো স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠনের মধ্যে নানা গ্রুপ এবং অন্তর্দ্বন্দ্ব, ব্যক্তিগত পর্যায়ে দুর্নীতি, জন বিচ্ছিন্নতা এবং বিরোধীদলের অপপ্রচার৷ এই সব কারণকে বিবেচনায় রেখে আগামী নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ৷
এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম কয়েকদিন ধরেই বলে আসছেন যে, যারা দলের জন্য দায় তাঁদেরকে আর টানা যাবে না৷ তাদের বাদ দিয়েই আওয়ামী লীগকে এগিয়ে যেতে হবে৷ বৃহস্পতিবার যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা অপকর্ম করেছেন তারা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না৷
আসলেই কি আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ‘ক্লিন ইমেজ’-এর প্রার্থীদের বেছে নেবে, এক্ষেত্রে দলের নীতি কি? এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের ব্যাপারে কয়েকটি নীতি অনুসরণ করা হবে৷ আর তা হলো প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা এবং ক্লিন ইমেজ৷ তিনি বলেন, যারা বিতর্কিত, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে এবং যারা জনগণ থেকে দূরে সরে গেছেন তাদের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই৷ বর্তমানে সংসদ সদস্য হলেই যে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া যাবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ মানদণ্ডে উত্তীর্ণ না হলে বর্তমান অনেক সংসদ সদস্যই তাই মনোনয়ন পাবেন না৷
হানিফ বলেন, কোনো মন্ত্রী, এমপি বা নেতার ব্যক্তিগত কোনো নেতিবাচক কাজের দায় নেবে না সরকার বা দল৷ তাই যারা ব্যক্তিগত কাজের জন্য বিতর্কিত হয়েছেন, তার ফল তাদেরই ভোগ করতে হবে৷ তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ভালো করতে হলে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে৷ তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দলে ঐক্য ফিরিয়ে একসঙ্গে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
এদিকে, লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বুধবার বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিএনপিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি না নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ এর প্রতিক্রিয়ায় হানিফ বলেন, বিএনপি নির্বাচনের না আন্দোলনের প্রস্তুতি নেবে – তা বিএনপির বিষয়৷ এ ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না৷ তবে নির্বাচন হবে যথাসময়েই৷ সূত্র: ডিডব্লিউ।