বিচার বিভাগকে আধুনিকীকরণে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে : আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, একবিংশ শতাব্দীর সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিচার বিভাগকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে অনেক পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, `আদালত ভবন নির্মাণ, নতুন বিচারক নিয়োগ এবং বিচারকদের বেতন বৃদ্ধিসহ দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ ও গাড়ি সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।’
রোববার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য অনলাইনে আয়োজিত ৭ম ওরিয়েন্টশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘বিচার বিভাগের উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগসমূহ তখনই সফল হবে যখন বিচার বিভাগ জনগণের প্রত্যাশা মেটাতে সক্ষম হবে। জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে আদালত তার মর্যাদা ধরে রাখতে পারবে। দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষ থেকে সর্বোচ্চ দক্ষতা ও সততা দিয়ে বিচারকরা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক হবেন।’
মামলাজট কমিয়ে আনাকে বিচার বিভাগের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি বিচারকদের উদ্ভাবনীমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ মামলাজট কমাতে সাহায্য করবে। বিচারিক কর্মঘণ্টার সঠিক প্রয়োগ, কার্যকর মামলা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, দক্ষ আদালত ব্যবস্থাপনা এবং সর্বোপরি বিচারকদের ‘আইডিয়াল লিডারশিপের’মাধ্যমে মামলার বোঝা কমতে পারে।’
বিচার প্রক্রিয়ায় স্টেকহোল্ডারদের সাথে কার্যকর সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, মামলাজট কমাতে বিচার ব্যবস্থায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাকে অধিক কার্যকর করার লক্ষ্যে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আইনে সংশোধনী এনে মামলার বিভিন্ন স্তরে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ে সাক্ষীর হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য গত দুদিন পূর্বে বিদ্যমান সমন জারি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি মোবাইল এসএমএস’র মাধ্যমে মামলার তারিখ সম্পর্কে সাক্ষীকে অবগতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে পাইলটিংয়ের মাধ্যমে নরসিংদী ও কুমিল্লা জেলায় উক্ত কার্যক্রম শুরু করা হলেও এর কার্যকর মূল্যায়নের পর তা সারা দেশে বাস্তবায়ন করা হবে।
আনিসুল হক বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সরকার ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করে জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকারকে সমুন্নত রেখেছে। অধিকন্তু ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প একনেকে পাশ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার অন্যতম অনুষঙ্গ হলো আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা। এই আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্ব আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সাওয়ার এবং ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. গোলাম কিবরিয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।