বিএনপি থেকে শওকত মাহমুদ বহিষ্কার, সন্দেহের তালিকায় আছে আরও
দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করায় ২০১৯ ও ২০২২ সালে বিএনপি শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল। নোটিশের জবাব দেয়ায় তার বিষয়ে তখন আর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সর্বশেষ গত ১৬ই মার্চ রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস্ জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে নৈশভোজের আয়োজন করেন। সেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তীকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব করা হয় ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে।
দলীয় সূত্র জানায়, সোমবার রাতে বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে শওকত মাহমুদের বিষয়টি উপস্থাপন করেন বৈঠকে অংশ নেয়া নেতারা। পরে স্থায়ী কমিটি তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। সূত্র জানায়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্মকা-ে জড়িত, ‘ইনসাফ কায়েম কমিটি’তে অংশগ্রহণ ও চলমান আন্দোলন সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় রয়েছে এমন আরও কয়েকজন বিএনপি নেতার বিষয়ে আলোচনা হয়। বিএনপি’র নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। তাদের কর্মকা- পর্যবেক্ষণ করছেন দলটির হাইকমান্ড। বনানীর বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি গতকাল মানবজমিনকে বলেন, নৈশভোজ অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। সেখানে যেসব বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে তার বিষয়ে আমি আগে অবগত ছিলাম না। জানলে সেখানে যেতাম না।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৩ই ডিসেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। সেবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে একটি সমাবেশকে কেন্দ্র করে তাকে এবং আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদকে ওই নোটিশ দেয়া হয়। তবে তারা শোকজের জবাব দেয়ার পর তা সুরাহা হয়ে গিয়েছিল। গত বছরের ২৭শে মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির’ দাবিতে ‘পেশাজীবী সমাজের’ ব্যানারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে শওকত মাহমুদসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে গত বছরের ৬ই এপ্রিল দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে পেশাজীবীদের ব্যানারে ওই সমাবেশ করায় শওকত মাহমুদের কাছে ব্যাখ্যা চায় বিএনপি। তখন ব্যাখ্যা দিয়ে পার পান তিনি।
শওকত মাহমুদ বিএনপি’র পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং পরে ৬ষ্ঠ কাউন্সিলে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান হন। এ ছাড়া কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০১৬ সাল থেকে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শওকত মাহমুদ। বিএনপি’র বাইরে শওকত মাহমুদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিএনপি সমর্থিত সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়কও ছিলেন।