বিএনপির ভিশন ২০৩০

28/09/2013 5:30 pmViews: 12

bnp...হাসান শিপলু : আগামী ২০৩০ সালকে টার্গেট করে নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়া তৈরি করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। ১৬ দফা দিয়ে সাজানো হয়েছে ‘ভিশন-২০৩০’ নামে এই রূপকল্প। এতে পূর্ব ও পশ্চিমমুখী কূটনীতির সেতুবন্ধন, মেয়েদের স্নাতক ও ছেলেদের ন্যূনতম দশম শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক, ন্যায়পাল কার্যকর, প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করা, পুলিশ কমিশন গঠন এবং উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ নীতিমালা, বিদ্যুত্ উত্পাদনে কয়লা ব্যবহার প্রাধান্য দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

গত জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে ‘ভিশন-২০২১’ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।

বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাতে এই রূপকল্প জমা দেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। প্রায় এক মাস আগে বিএনপি সমর্থক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত কয়েকজন অরাজনৈতিক নেতাকে ইশতেহার তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, দলের সিনিয়র নেতাদের কয়েকজন আরও একটি রূপকল্প তৈরি করছেন। খালেদা জিয়া বিভিন্ন জনসভায় যে সব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, সেগুলোও ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত হবে।

এ ইশতেহার তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক পিয়াস করীমসহ আরও কয়েকজন।

বৃহস্পতিবার রাতে তারা খালেদা জিয়ার কাছে রূপকল্প হস্তান্তরের সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এবং উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, তিনি কিছু জানেন না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রভাবশালী নেতা ইশতেহারে ২০৩০ রূপকল্পের কথা শিকার করেছেন।

১৬ দফা রূপকল্পে যা রয়েছে— ২০৩০ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় ৪ থেকে ৫ হাজার ডলারে উন্নীত হবে, সমাজে বিভাজন দূর করে নতুন সমাজ গড়ে তোলা হবে, পুলিশ সংস্কারের লক্ষ্যে পুলিশ কমিশন গঠন এবং উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল পদ ও কার্যালয় সক্রিয় করা হবে, নির্বাচন কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও নিয়ন্ত্রক সংস্থায় পদায়ন বা নিয়োগ দেয়া হবে ‘অনুসন্ধান কমিটি’ এবং সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে জাতির জন্য হুমকি উল্লেখ করে বলা হয়, সন্ত্রাসী তত্পরতা বরদাশ করা হবে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলে সন্ত্রাসবাদকে নিরুত্সাহিত করার নীতিতে বিশ্বাসী বিএনপি।

বৈদেশি সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশ এবং আরব বিশ্বের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় বিএনপি। পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলো সঙ্গে উন্নয়ন সংযোগ, প্রযুক্তি হস্তান্তরের নীতি গড়ে তোলা হবে।

মেয়েদের স্নাতক ও ছেলেদের ন্যূনতম দশম শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক করা হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতির জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য তারা কাজ করে যাবেন। শস্য বীমা, মত্স্য ও পোল্টি বীমা প্রবর্তন করা হবে, গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন, আঞ্চলিক সম্পর্ক গড়ে তোলা হবে।

বিদ্যুতের সমস্যা নিরসনকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বিদ্যুত্ উত্পাদনে কয়লার মুজদ হতে পারে টেকসই উত্স। কয়লার ব্যবহারের ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্য গঠন ও গবেষণা সেল তৈরি করা হবে।

রেল ও নৌপথকে গুরুত্ব দেয়া হবে। এশিয়ান হাইওয়েকে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত এবং ঢাকা-কুনমিন রেল যোগাযোগ স্থাপন।

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিএনপির নীতি হবে, রোগ প্রতিরোধে নিরাময় থেকে শ্রেয়, নারীর ক্ষমতায়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া হবে এবং পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ হবে।

-বর্তমান

Leave a Reply