বাড়ছে তদবির: সরকারের আছে ৮ কর্মদিবস

08/10/2013 8:42 pmViews: 8

bangladesh-Logoউবায়দুল্লাহ বাদল : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় রয়েছে আর মাত্র আট কর্মদিবস। এ সময়ের মধ্যে সরকারের প্রতিশ্রুত ও প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ কারণে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে দিন দিন বাড়ছে দর্শনার্থী ও তদবিরকারীদের ভিড়।

এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই গত ২৯ সেপ্টেম্বর সব সচিবকে দ্রুত ফাইল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বর্তমানে সব মন্ত্রণালয়েই ফাইল নিষ্পত্তির কাজ চলছে।

জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা এ বিষয়ে বলেন, সব কাজই প্রায় শেষ। তবে ২৪ অক্টোবরের পর যে নীতিনির্ধারণী কোনো কাজ করা যাবে না তা কিন্তু সংবিধানের কোথাও বলা নেই। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বিষয়টির ঘোষণা দিয়েছেন তাই আলোচনায় আসছে। আলটিমেটলি পরবর্তী নির্বাচিত মন্ত্রিসভার শপথ না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ২৪ অক্টোবরের পর সরকার আর কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না। সংসদ বহাল থাকলেও কোনো অধিবেশন বসবে না। ফলে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত এই আট কর্মদিবসের মধ্যেই শেষ করা হবে। এরপরে আর হবে না।

সরকারের দিনপঞ্জিকা অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার বাদ দিয়ে চলতি সপ্তাহে কর্মদিবস রয়েছে মাত্র দুদিন। ১১ ও ১২ অক্টোবর সাপ্তাহিক ছুটি। আগামী সপ্তাহে শুধু ১৩ অক্টোবর রবিবার সরকারি-বেসরকারি সব অফিস-আদালত খোলা রয়েছে। বাকি চারদিনের মধ্যে ১৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর সরকারি ছুটি। আর ১৬ অক্টোবর সারাদেশে ঈদ পালিত হবে। ফলে আগামী ১৫ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ঈদের ছুটি। ১৮ ও ১৯ অক্টোবর শুক্র ও শনিবার হওয়ায় এ দুদিনও সরকারি ছুটি। ফলে ঈদের পর সব সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত খুলবে ২০ অক্টোবর। ২০ অক্টোবরের পর ওই সপ্তাহের চারদিনই অর্থাত্ ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত পুরোদমে সরকারি কাজকর্ম চলবে। হিসাবমতে এর মধ্যে আর একটি মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

‘গতকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকই শেষে বৈঠক কি না’ জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা এ মুহূর্তে বলা ঠিক হবে না। সরকারপ্রধান ইচ্ছা করলে এ সময়ের মধ্যে এক বা একাধিক বৈঠক করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী আগামী ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত সরকার যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু ২৫ ও ২৬ অক্টোবর শুক্র ও শনিবার হওয়ায় মূলত ২৪ অক্টোবরের মধ্যেই সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইতিমধ্যে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সরকারের প্রতিশ্রুত প্রকল্প ও সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা গেছে, সরকারের শেষ সময়ে নিজেদের কাজ করিয়ে নেয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সেবাপ্রার্থীরা মন্ত্রণালয়ে ভিড় করছেন। কিন্তু শেষ সময়ে এসে মন্ত্রীদের দেখা পাচ্ছেন না। কারণ সামনে দশম জাতীয় নির্বাচন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মন্ত্রীরা ঘন ঘন যাচ্ছেন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারের জন্য। একই সপ্তাহে শারদীয় দুর্গাপূজা ও পবিত্র ঈদুল আজহার তারিখ হওয়ায় সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন রাজনীতিবিদরা। সামনে ভোট হওয়ায় এবারের পূজা ও কোরবানি ঈদে উভয় সম্প্রদায়ের লোকদের সন্তুষ্টি অর্জনে ব্যস্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। ফলে সহসাই তাদের দেখা পাচ্ছে না দর্শনার্থীরা। গতকাল সচিবালয়ে দর্শনার্থীবিহীন দিবস থাকলেও অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চোখে পড়ার মতো দর্শনার্থী দেখা গেছে।
– বর্তমান

Leave a Reply