বাজেটে বিতর্কিত বিষয় সুরাহার ইঙ্গিত পরিকল্পনা মন্ত্রীর
প্রস্তাবিত বাজেট পাস হওয়ার সময় বিতর্কিত বিষয়ের সুরাহার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল। গতকাল বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, সংসদে আলোচনা হচ্ছে। পাসের সময় দেখবেন, সুরাহা হয়ে যাবে। সামান্যতম সন্দেহ থাকবে না।
বাজেটে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অন্যদিকে ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক বাড়ানোসহ কয়েকটি বিষয়েও সমালোচনা চলছে। আমাদের দেশে প্রকল্প ব্যয় বেশি হওয়ার জবাব দিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর যে কোনো দেশের চেয়ে জমির দাম দুই তিন গুণ বেশি।
আলোচনায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ না হওয়ার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এখানে ব্যবসায়ের খরচ দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি। অতি রাজনীতির কারণে মেধাবীরা কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঠিকমত কাজ করতে পারছে না। যেখাবে ভোটাধিকার নেই, সেখানে প্রতিষ্ঠান কীভাবে কাজ করবে?
এর জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে চাইনি। তবুও বলতে হচ্ছে, একদিকে মানুষ মারবেন আবার প্রবৃদ্ধি চাইবেন। তাতো ঠিক না। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সরকারের সাম্প্রতিক সময়ের প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
এ সময় সরকারি ব্যাংকে পুনঃঅর্থায়নের সমালোচনার জবাব দিয়ে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘উই আর এ ঝুঁকিবাজ সরকার। আমরা বুঝেশুনেই ঝুঁকি নিয়েছি। তার ইতিবাচক ফলও পাচ্ছি।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বাজেট প্রণয়নে সবার মতামত নেওয়া হয় না বলে বাস্তবায়নে তার প্রভাব পড়ে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে যেভাবে বাজেট তৈরি হচ্ছে, তাতে মন্ত্রী-এমপিদের কোনো ভূমিকা নেই। এমনকি এ প্রক্রিয়ায় সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিরও কোনো ভূমিকা নেই। প্রধানমন্ত্রী কিছু নির্দেশনা দেন, আর অর্থমন্ত্রী সেভাবে একটা বাজেট তৈরি করেন। জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ না থাকায় বাজেট বাস্তবায়ন হয় না। নতুন কোনো করারোপ করা হলে তা নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পর্যন্ত কোনো আলোচনা হয় না।
অনুষ্ঠানের সভাপতি রেহমান সোবহান কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য আলাদা করে কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দেন। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য এডিপির মানসম্পন্ন বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যয় ও সময় বেশি যাচ্ছে।
আলোচনায় সিপিডি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।