বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে: জাতিসংঘ মহাসচিব

26/04/2018 7:00 pmViews: 8
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে: জাতিসংঘ মহাসচিব
 
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে: জাতিসংঘ মহাসচিব
 
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি যখনই কোনো মিশনে যাচ্ছি, তখনই উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের কথা বলি। বাংলাদেশের নারী পুলিশের দল সোচ্চার রয়েছেন সামাজিক-সম্প্রীতি সুসংহত করতে। আমি সকলকে অভিবাদন জানাচ্ছি।
স্থানীয় সময় বুধবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় সকল কর্মকর্তাসহ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের কূটনীতিকরা যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা করে জাতিসংঘের চলতি ৭২তম সাধারণ অধিবেশনের সভাপতি  মিরস্ল্যাভ লাজ্যাক বলেন, শান্তি বিনির্মাণে দাঙ্গাপূর্ণ অঞ্চলে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশি রক্ষীরা উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। গত ৩০ বছরে ১৪২ জন বাংলাদেশি প্রাণ দিয়েছেন শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। আহত হয়েছেন ২২৩ জন। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সে সব প্রাণ উৎসর্গকারী বাংলাদেশিকে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৩০ বছরের ভূমিকার উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা শুনে আমি অভিভূত।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক শান্তি আর সমৃদ্ধি ক্ষেত্রে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন। বিশ্ব শান্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।
স্বাগত বক্তব্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন শান্তিরক্ষা মিশনের বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার কারণেই বাংলাদেশ প্রশংসিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের মিডিয়া বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে ইরাকের দাঙ্গা মেটাতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বপ্রথম অংশ নেন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। সেই থেকে বিশ্বের ২৭টি মিশনের দায়িত্ব সম্পাদন করেছে। এখন তারা কাজ করছে ১১টি দেশে। বর্তমানে ৭ হাজার ৮০ জন রয়েছেন এসব মিশনে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য ৫ হাজার ৪৫৬, নৌবাহিনী ৩৪০, বিমান বাহিনী ৫০১ এবং পুলিশ বাহিনীর ৭৮৩ জন রয়েছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় বৃহত্তম শান্তিরক্ষী সরবরাহকারী রাষ্ট্রের মর্যাদায় রয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মহিলা সদস্যের সংখ্যা ১৫৭।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, সাইপ্রাস, কঙ্গো, হাইতি, লেবানন, লাইবেরিয়া, মালি, সাউথ সুদান এবং সুদানের মিশনে কাজ করছেন বাংলাদেশিরা। এরমধ্যে ফোর্স কমান্ডারসহ শীর্ষপদেও রয়েছেন কয়েকজন।
৩০ বছর পূর্তি উৎসবের স্লোগান ছিল উই আর কমিরেটড এ্যান্ড ইনভলব। এ উৎসবে জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. শামীম আহসান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদসহ প্রবাসের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply