বরিশালে বিএনপি-জামায়াতের সেই টাইগার বাহিনী ফের সক্রিয় হচ্ছে
প্রেমানন্দ ঘরামী, বরিশাল ॥ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে (২০০১ সালে) বরিশালের বানারীপাড়ার বহুল আলোচিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতনকারী সশস্ত্র টাইগার বাহিনী ফের সক্রিয় হচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর জোট সরকারের সময়কার ন্যায় পূর্ণরায় জুলুম, অত্যাচার ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভুক্তভোগী এক যুবক থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদি উপজেলার বাইশারি ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের ঠাকুরবাড়ির বাসিন্দা দিনমজুর সমীর চক্রবর্তীর পুত্র বাপ্পী চক্রবর্তী জানান, তিনি দীর্ঘদিন থেকে বানারীপাড়া সদরের শতরূপা গার্মেন্টেসের সেলস্ম্যান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে টাইগার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য রিয়াজ উদ্দিন ও সোহেল বেপারীসহ তাদের সহযোগীরা সশস্ত্র অবস্থায় তার পথরোধ করে। এসময় সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক তার হাতে কয়েকটি ইয়ারা ও গাঁজা ধরিয়ে মোবাইল ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে তার কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদাদাবি করে দু’দিনের সময় বেঁধে দেয়। এসময় সন্ত্রাসীরা তার সাথে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অভিযোগে আরো জানা গেছে, সন্ত্রাসীদের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দিবালোকে সশস্ত্র অবস্থায় ওইবাড়িতে হানা দেয়। এসময় তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় সন্ত্রাসীরা বাপ্পীকে মারধর করে আরো একদিনের সময় বেঁধে দেন। এরমধ্যে তাদের দাবিকৃত টাকা না দিলে বাপ্পী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনার ওইদিন রাতে থানায় মামলা দায়েরের পর বাপ্পী ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্য এখন নিজ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সূত্রমতে, এরপূর্বে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা একইবাড়ির সঞ্জু চক্রবর্তীকে চাঁদার দাবিতে মারধর করে। সন্ত্রাসীদের অপহরনের হুমকির মুখে রয়েছে সঞ্জুর স্কুল পড়–য়া মেয়ে ও বোন। থানায় মামলা দায়েরের পরেও সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করায় ঠাকুরবাড়ির ১৫টি সংখ্যালঘু পরিবারের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে বানারীপাড়া থানার ওসি গোলাম সরোয়ার জানান, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অন্যান্য অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি (ওসি) উল্লেখ করেন।