বরিশালে আজ মাঠে নামবে জোট-মহাজোট ॥ প্রস্তুত আইন শৃংখলা বাহিনী
প্রেমানন্দ ঘরামী, বরিশাল ॥ বরিশালের উত্তপ্ত রাজনীতির ময়দানে শক্তি প্রদর্শনের মহড়ায় আজ শুক্রবার সকালে মাঠে নামবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নেতা-কর্মীরা। একই সময় মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের সমর্থকেরা। পাল্টাপাল্টি ভাবে রাজনীতির মাঠ দখলের লড়াইয়ে এটা হবে উভয়দলের অস্তিত্বের লড়াই।
একাটি গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ১৮ দলের পক্ষে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা মাঠে নেমে নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটানোর জন্য পরিকল্পনা এটেছে। ফলে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা করছেন রাজনৈতিক বিষেশজ্ঞরা। তবে, যেকোন ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি ঠেঁকাতে প্রস্তুত রয়েছেন আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। ইতোমধ্যে বরিশাল নগরীসহ জেলার গুরুতপূর্ণ এলাকায় পুলিশী নজরদারির পাশাপাশি বৃদ্ধি করা হয়েছে র্যাবের টহল। নগরীতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সকল দলের সভা ও সমাবেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার খোঁদ নগরী থেকে নাশকতার তিন’শ লাঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করেছে বিএনপি ও জামায়াতের নয় জনকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বিএনপি যদি রাজপথে নেমে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করে তাহলে বরিশালের মহাজোটের নেতা-কর্মীরাও তার সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। আর ১৮ দলীয় জোটের কর্মসূচীতে বাঁধা আসলে তারাও তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিয়েছে।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস-এমপি জানান, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে জনসাধারনের জানমালের যাতে কোন ক্ষতি না হয় তার জন্য অত্যন্ত প্রহরী হিসেবে কাজ করবেন। একই সাথে তারা মহাজোট সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরবেন। বরিশালের প্রবেশদ্বার গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র মোঃ হারিছুর রহমান জানান, আজ শুক্রবার মহাজোটের নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবেন। পর্যবেক্ষণ করবে বিএনপি ও জামায়াতের গতিবিধি। তারা যদি সংঘাত, সংঘর্ষ কিংবা জানমালের ক্ষতি করে তাহলে মহাজোটের নেতা-কর্মীরাও তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার-এমপি জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারা রাজপথেই সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করবেন। তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে কেউ বাঁধা দিলে গড়ে তীব্র প্রতিরোধ তোলা হবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার একেএম এহসান উল¬াহ জানান, কেউ যদি আইন অমান্য করে কোনো ধরনের নৈরাজ্যমূলক কর্মকান্ড ঘটাতে চায় তাহলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে। তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে নগরীসহ জেলার গুরুতপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য র্যাবের টহলও বৃদ্ধি করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লে¬খ করেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, সাবেক চীফ হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল¬াহ জানান, সাংবিধানিকভাবেই দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এনিয়ে কেউ নৈরাজ্যের সৃষ্টি করার চেষ্ঠা করলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জনতার ঐক্যবদ্ধ জোয়ারের মাধ্যমে সব নৈরাজ্য আর অপশক্তিকে প্রতিরোধ করে দেশে শান্তি ও সুশাসনের রাজনৈতিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে।