‘বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন, আর বিএনপি এক কলমের খোঁচায় তা কেড়ে নিয়েছিলো’

13/08/2020 4:30 pmViews: 7

‘বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন, আর বিএনপি এক কলমের খোঁচায় তা কেড়ে নিয়েছিলো’

‘বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন, আর বিএনপি এক কলমের খোঁচায় তা কেড়ে নিয়েছিলো’

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী। ছবি : ইত্তেফাক

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন, আর বিএনপি ২০০৬ সালে ক্ষমতায় গিয়ে এক কলমের খোঁচায় তা কেড়ে নিয়েছিলো। আওয়ামী লীগ সেই মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।’

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউট-পিআইবি মিলনায়তনে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র সহায়তায় বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের অনেক উচ্চাসনে বসিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে প্রেস ইন্সটিটিউট, প্রেস কাউন্সিল গঠিত হয়, তার হাত ধরেই ওয়েজবোর্ড গঠিত হয়। তিনি সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিতেন, যেটি ২০০৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এক কলমের খোঁচায় কেড়ে নিয়ে তাদের শ্রমিক বানিয়ে দিলেন। সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদাটা কেড়ে নেয়া হলো।’

‘অর্থাৎ তারা (বিএনপি) সাংবাদিক এবং শ্রমিকের মধ্যে কোনো পার্থক্য রাখলেন না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক, ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়’ বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেই আইন সংশোধনের কাজ চলছে এবং সংশোধিত আইনের খসড়া ইতোমধ্যেই নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে, জানান তথ্যমন্ত্রী। খসড়া আইনটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষাধীন রয়েছে যা সমাপনান্তে শিগগিরই মন্ত্রিসভা হয়ে সংসদে উত্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সংশোধিত আইনটি পাশ হলে সাংবাদিকদের যে মর্যাদা হরণ করা হয়েছিলো, তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

করোনা মহামারীর মধ্যে সাংবাদিক সহায়তা নিয়ে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, করোনাকালে উপমহাদেশের কোথাও যেটি করা হয়নি, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেটি করা হচ্ছে, চাকরিচ্যুতি, বেতন না পাওয়া বা দীর্ঘ বেকারত্ব -এই তিন ক্যাটাগরির অসুবিধায় নিপতিত সাংবাদিকদের এককালীন সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে দেড় হাজার সাংবাদিককে এই সাহায্য দেয়া হয়েছে এবং এটি অব্যাহত রয়েছে।

সরকারের সিদ্ধান্তে এ সহায়তা দলমত নির্বিশেষে দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা প্রেসক্লাবের সামনে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বা মানববন্ধন করে, গলা উঁচু করে বক্তৃতা করে, তাদেরকেও শেখ হাসিনার সরকারই সাহায্যের আওতায় এনেছে।’

হাছান মাহমুদ এসময় ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও তাদের অংগসংগঠনগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদেরকে যেভাবে দলমত নির্বিশেষে এ সহায়তা দেবার কথা বলা হয়েছিলো, তারা তা অনুসরণ করেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সহায়তা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল বা শ্রীলঙ্কা কোথাও দেয়া হচ্ছে না। করোনায় কোনো সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে সাহায্য দেয়া হচ্ছে, কিন্তু সেসব দেশে করোনায় অসুবিধায় নিপতিত সাংবাদিকদের এভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে না। এজন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাবার জন্য সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এব্যবস্থার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মন্ত্রী এসময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্য, শহীদ জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।

সভাপ্রধানের বক্তৃতায় তথ্যসচিব কামরুন নাহার বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই ঘরে ঘরে গড়ে উঠবে লক্ষ মুজিব, বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা।’

তথ্যসচিব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন নাহারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও পিআইবি পরিচালনা বোর্ড সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজে মহাসচিব শাবান মাহমুদ ও ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু।

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ওয়াজেদ সভায় মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, ‘বাঙালির জীবনের সবচেয়ে বড়ো অধ্যায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, যিনি আন্দোলন- সংগ্রাম- সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়েছেন। পঁচাত্তর- পরবর্তী জান্তা ও নির্বাচিত শাসকরা তার নামোচ্চারণ নিষিদ্ধ করেছিল। ইতিহাসসহ সব স্থাপনা থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল তার নাম। কিন্তু সব দুর্ভেদ্য অন্ধকার ভেদ করে তিনি ক্রমাগত আলোকিত হয়ে উঠেছেন।’

Leave a Reply