বগুড়ায় স্কুলে আগুন লাগাতে গিয়ে ধরা খেলেন প্রধান শিক্ষক
জামায়াত-শিবিরের ওপর দোষ চাপাতে নিজের স্কুলে নিজেই আগুন দিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েছেন সুজাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী আবদুল মান্নান। এ সময় তাকে বিক্ষুব্ধরা গণধোলাই শুরু করলে শাজাহানপুর থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ এবং মেজর সুফি কামরুদ্দীনের নেতৃত্বে যৌথবাহিনী বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরে এলাকাবাসীর দাবির মুখে ওই স্কুলশিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকালে শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান সকালে স্কুলে আসেন। হরতালের কারণে এ সময় অন্যান্য শিক্ষকরা স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না। এই সুযোগে আবদুল মান্নান স্কুলের দফতরি বাবুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলের আসবাবপত্রে আগুন লাগিয়ে দিয়ে চিৎকার শুরু করেন।
এ সময় স্থানীয়রা স্কুলের দফতরিকে আটক করলে সে জানায় তার কোনো দোষ নেই। প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান নিজেই আগুন লাগিয়েছেন। পরে লোকজন প্রধান শিক্ষককে আটক করলে তিনি প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আবদুল মান্নান পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেন। পরে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসী তাকে ধরে স্কুলেই তালাবদ্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
খবর পেয়ে শাজাহানপুর থানার ওসি পুলশ ফোর্স নিয়ে শিক্ষককে উদ্ধারের চেষ্টা করলে গ্রামবাসী বাধা দেন। পরে সেখানে যৌথবাহিনীর একটি টিম উপস্থিত হয়ে ‘দোষী’ শিক্ষককে শাস্তির আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
শাজাহানপুর থানার ওসি আবদুল মান্নান জানান, সুজাবাদ স্কুলে আগুন লাগানো এবং প্রধান শিক্ষককে আটকে রাখার খবর পেয়ে আমরা শিক্ষককে উদ্ধার করেছি। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুর রহমান জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এখন সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলে তিনি জানান।
সুজাবাদ স্কুলের দফতরি বাবুল হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান বগুড়া সদরের কলোনী এলাকার বাসিন্দা এবং বগুড়া পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মী। মঙ্গলবার সকালে সবার আগে তিনি স্কুলে এসেই আসবাবপত্রে আগুন লাগানো শুরু করেন। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলাকাবাসী এসে আমাকেসহ তাকে ধরে ফেলেন।