প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে :প্রধানমন্ত্রী
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে :প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের চক্র থেকে এ অঞ্চলের মানুষকে বের করে আনতে ব্যাপক সক্ষমতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশে বৈশ্বিক অভিযোজন কেন্দ্রের (গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন-জিসিএ) আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা, ভূমিধস, তুষারধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবচেয় ঝুঁকিতে আছে দক্ষিণ এশিয়া। এমনকি তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে বাড়তে থাকলেও বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। দুর্যোগে শিশু, নারী, বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের ঝুঁকির বিষয়টিও আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।’
গত এক দশকে দক্ষিণ এশিয়ার অর্ধেক জনগোষ্ঠী, অর্থাত্ প্রায় ৭০ কোটি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আরেকটি এসে আঘাত হানে, ফলে যে কোনো অগ্রগতি উলটে যায়। এই চক্র ভাঙতে দক্ষিণ এশিয়াকে দুর্যোগে টিকে থাকার সক্ষমতা আরো বাড়াতে হবে। প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন, গ্রিন হাউজ গ্যাসের কারণে বাড়তে থাকা তাপমাত্রা ও অন্যান্য পরিবেশগত ক্ষতি রোধে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের সরকার ২০০৯ সালে গৃহীত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে নানা পদক্ষেপ এবং অভিযোজন কর্মসূচি নিয়েছে। ২০০৯ সালে আমরা জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল প্রতিষ্ঠা করেছি এবং কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ পর্যন্ত ৪৩ কোটি ডলার নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, এই কার্যালয়ের মাধ্যমে অভিযোজন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা এবং কর্মসূচি বিনিময় হবে। এ অঞ্চলের অভিযোজনবিষয়ক সমস্যা সমাধান এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে কাজ করবে এই কার্যালয়। ইউএনএফসিসিসির জলবায়ুবিষয়ক দুটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম’ এবং ‘ভালনারেবল-২০’ এর সভাপতি পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতায় জিসিএর ঢাকা কার্যালয় সমর্থন দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ অনন্য নজির স্থাপন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় এখানকার জনগণ বারবার সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। তার পরও পরিবর্তন করার মতো এখনো অনেক কিছু আছে।
মহামারির মধ্যে বাংলাদেশে কার্যালয় চালুতে সহায়তা করায় তিনি জিসিএর সভাপতি বান কি মুনকে ধন্যবাদ জানান। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিসিএর বাংলাদেশ কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।