প্রশ্ন প্রণয়ন ও বিতরণ সংশ্লিষ্টরা ফাঁসে জড়িত : টিআইবি
০৫ আগস্ট, ২০১৫
গত চার বছরে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় ৬৩টি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় প্রশ্ন প্রণয়ন ও বিতরণের সঙ্গে যে সকল সরকারি লোকজন জড়িত তাদের একাংশ কোনো না কোনো পর্যায়ে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গেও জড়িত।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ধানমন্ডিস্থ টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। “পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস : প্রক্রিয়া, কারণ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ( রিচার্জ অ্যান্ড পলিসি) রুমানা শারমিন এ তথ্য জানান।
প্রশ্ন তৈরি, ছাপানো ও বিতরণের তিনটি পর্যায়ে প্রায় ১৯টি ধাপে প্রশ্ন ফাঁসের ঝুঁকি বিদ্যমান রয়েছে বলে গবেষেণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে ১৯৭৯ সালের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে এ প্রবণতা শুরু হয়। গত শতকের সত্তরের দশক থেকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটলেও গত পাঁচ বছরে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ একটি নিয়মিত ঘটনা হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চার বছরের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৩টি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। তার মধ্যে ২০১৩ ও ২০১৪ সালের পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার সব পত্রের প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগের তথ্য পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ এ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
গবেষণা পরিকল্পনা ও প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছেন টিআইবির রিসার্চ এ্যান্ড পলিসি বিভাগের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নিহার রঞ্জন রায়, নীনা শামসুন নাহার ও রুমানা শারমিন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়- নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে অস্বীকার করা, আইনের প্রয়োগে শিথিলতা, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করা, একই শিক্ষককে প্রতিবছর প্রশ্ন প্রণেতা হিসেবে নিয়োগ করা, তথ্য প্রযুক্তির উপর তদারকির ঘাটতিসহ বেশ কয়েকটি কারণে অব্যহতভাবে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে।
কোচিং সেন্টারগুলো প্রশ্ন ফাঁসের জন্য দায়ি উল্ল্যেখ করে ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ( রিচার্জ অ্যান্ড পলিসি) রুমানা শারমিন বলেন , প্রশ্ন ফাঁস ও বাজারজাত করার ক্ষেত্রে মূখ্য ভুমিকা পালন করছে কোচিং সেন্টার। এছাড়া, গাইড বই ব্যবসা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত গোষ্ঠী ও ফটোকফির দোকানের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস হয়।
তিনি আরো জানান, প্রশ্ন ফাঁসের কারণে নৈতিকতার অবক্ষয় ও শিক্ষার গুনগত মানের অবনতি হচ্ছে। এছাড়া প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি উভয় অংশ জড়িত বলে দাবি করা হয়।
প্রশ্নফাঁস রোধে সংশ্লিষ্ট আইনগুলোকে যথাযথো প্রয়োগ করার সুপারিশ করা হয় এ গবেষণায়। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর তদারকি বাড়ানো এবং প্রচলিত আইনের অধিনে শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।