প্রযুক্তির ব্যবহারে গুণসম্পন্ন সন্তান জন্মদান !
যুক্তরাষ্ট্রের একদল চিকিৎসাবিজ্ঞানী উদ্ভাবন করেছেন এমনই এক প্রযুক্তি, যার দ্বারা বাবা-মায়ের ডিএনএর মিশ্রণে তৈরি করা যাবে ডিজিটাল ভ্রুণ। নতুন এই প্রযুক্তির নাম ম্যাচরাইট টেকনোলজি। কী ধরনের বংশগত রোগ শিশুর মধ্যে সঞ্চারিত হতে পারে তাও জানা যাবে এই পদ্ধতির সাহায্যে।
এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাবা-মায়েরা তাদের ইচ্ছেমতো গুণাবলিসম্পন্ন সন্তান জন্ম দিতে পারবেন। প্রক্রিয়াটা এ রকম দম্পতির উভয়ের ডিএনএ (এ ধরনের ডিএনএকে দাতা ডিএনএ বলা হয়) নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে, এর মধ্যে কী কী ঘাটতি বা ত্রুটি আছে। মানুষের পক্ষে খালি হাতে কিংবা সাধারণ যন্ত্রে এমন সূক্ষ্ম আণবিক পর্যায়ের কাজটি সম্পন্ন করা কষ্টসাধ্য। এই কষ্টসাধ্য কাজটি সহজ করবে কম্পিউটার কিংবা বলা যেতে পারে একটি সফটওয়্যার।
এই সফটওয়্যারের কাজ হবে দাতা ডিএনএর ভাঁজের মধ্যকার ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো খুঁজে খুঁজে চিহ্নিত করা। ধরা যাক, দম্পতি রোগবালাইমুক্ত সন্তান চান। তাহলে তাদের ডিএনএকে হতে হবে রোগবালাইমুক্ত।
সফটওয়্যারটি দাতা ডিএনএর ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে সেসব জিনকে খুঁজে বের করবে, যারা মানবদেহে রোগবালাই সৃষ্টি করে। এরপর দাতা ডিএনএ হতে এসব জিন সরিয়ে উপযুক্ত প্রোটিন যোগ করে দেওয়া হবে। ফলে এই দম্পতির যে সন্তান হবে, তার ডিএনএ হবে রোগবালাই সৃষ্টিকারী জিনমুক্ত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ফার্টিলিটি ক্লিনিকে এই প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়া যাবে। এতে প্রযুক্তি সহায়তা দেবে জিনপিকস নামের একটি কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রে সফলভাবে পরিচালনা করা গেলে এই প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চায় জিনপিকস।
এই প্রযুক্তি দ্বারা শিশুর চোখ, ত্বকের রং, উচ্চতা ও কোমরের মাপও জানা যাবে। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষক লি সিলভার জানান, ‘এই প্রযুক্তি দ্বারা ভ্রুণ বংশগত রোগের বাহক কিনা তা জানা যাবে। সিস্টিক ফাইব্রোসিস বা টে স্যাচ রোগের মতো বিরল কিছু জিনগত রোগও বাতলে দেবে এই প্রযুক্তি।’
বর্তমানে গর্ভধারণের পর ডিএনএ স্ক্রিনিং পদ্ধতির সাহায্যে ভ্রুণের রোগ সম্পর্কে জানা যায়। কিন্তু পদ্ধতির সাহায্যে গর্ভধারণের আগেই তা জানা যাবে।