প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার আবেদন
ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর সহ সরকারের আরও কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আবেদন করা হয়েছে সে দেশের কাছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির কাছে লেখা এক চিঠিতে এমন আবেদন করেছেন এটর্নি মার্টিন এফ. ম্যাকমাহোন। গতকাল এ খবর দিয়েছে পি আর নিউজওয়্যার। ওই চিঠিতে আরও যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন- ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ, মতিঝিল থানা পুলিশের মেহদি হাসান, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ দাস প্রমুখ। বলা হয়েছে, তারা মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘন করেছেন। মার্টিন এফ. ম্যাকমাহোন বলেছেন, নিন্দিত এইসব আইন লঙ্ঘনকারীদের যেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এতে নির্যাতন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গণহত্যার মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। বলা হয়, নিউ ইয়র্ক হিলটন মিডটাউনে ভিআইপি রুমে শনিবার একটি সেমিনার আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফর বাংলাদেশ (এইচআরডিবি)। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের পারফরমেন্সের মূল্যায়ন করা হয়। তাতে আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের এটর্নি মার্টিন এফ. ম্যাকমাহোন। তিনি বর্ণনা করেন রাষ্ট্রীয় নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের চাপে পড়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র সঙ্কটে রয়েছে। এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গত ২৭শে জুন ওয়াশিংটনে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে (আইসিসি) একটি আবেদন দেয়া হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সরকারের সদস্যরা ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা মানবতার বিরুদ্ধে যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে। আবেদনে আইসিসিকে এ অভিযোগ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। আইসিসি ট্রিটি বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বিষয়ক চুক্তিতে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে ২০১০ সালের ২৩শে মার্চ। বাংলাদেশে যেসব আইন বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা। এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্ট করেছে। বাংলাদেশের বিতর্কিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিটি)’র একজন বিবাদীর সাক্ষী সুখরঞ্জন বালিকে পুলিশ অপহরণ করে। এ বিষয়টি রিপোর্ট করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। শ্রম অধিকার কর্মী আমিনুল ইসলামকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি পুলিশ প্রতিবাদীদের কমপক্ষে কয়েক ডজন মানুষ হত্যা করে। এভাবে গণহত্যার আরও দৃষ্টান্ত রয়েছে। বলা হয়েছে, এটা উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, গত ৫ ও ৬ই মে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের প্রতিবাদ বিক্ষোভে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ওই সেমিনারেই ম্যাকমাহোন জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর সহ সরকারি কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির কাছে চিঠি লিখেছেন। ওই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ড. এম নাকিব রহমান। তিনি বলেন, দুর্নীতিকে সমর্থন করে হাসিনা সরকার দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছেন। তার সরকারে রয়েছে শেয়ার বাজার দুর্নীতি, পদ্মা সেতু দুর্নীতি, হল-মার্ক দুর্নীতি ইত্যাদি। ড. আবিদ বাহার বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশ ফ্যাসিজমের দিকে যাচ্ছে। আবু সামিহা সিরাজুস ইসলাম বলেন, হাসিনা সরকার ধর্মীয় অধিকারকেও লঙ্ঘন করছে।