প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্যাকেট নিউইয়র্কের রাস্তায়, বোমা সন্দেহে হুলুস্থুল!
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ যে ভাষণ দেবেন, সেই ভাষণ-সংবলিত পুস্তিকার প্যাকেটকে নিরাপত্তাকর্মীরা বোমা সন্দেহ করায় নিউইয়র্কে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটে গেছে।
প্যাকেটগুলোকে নাশকতার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীদের রেখে যাওয়া বোমা মনে করে নিউইয়র্ক পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড, কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই), অ্যান্টি টেরোরিজম টাস্ক ফোর্সের বিশেষ বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার লোকজন ব্যাপক তৎপরতা চালানোর পর আসল ঘটনা ধরা পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিউইয়র্কের সেকেন্ড অ্যাভিনিউ ও ৪৩ স্ট্রিটের পাশে প্যাকেটগুলো রেখে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মিশন কার্যালয়ে যান। তাঁদের প্যাকেটগুলো নিতে আসতে দেরি হচ্ছিল। হঠাৎ মালিকবিহীন প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখে লোকজন সেগুলোকে বিস্ফোরক বলে সন্দেহ করেন। তৎক্ষণাৎ চলে আসেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
এর পরই জাতিসংঘের পাশে অবস্থিত সেকেন্ড অ্যাভিনিউ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। আতঙ্কিত অনেককে দ্রুত সরে যেতে দেখা যায়।
নিউইয়র্ক পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড, কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই), অ্যান্টি টেরোরিজম টাস্ক ফোর্সের বিশেষ বাহিনী, দমকল, ডগ স্কোয়াড, অ্যাম্বুলেন্সসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এ সময় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে তাঁকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ থেকে ছাপা হয়ে আসা ভাষণের প্যাকেট শুঁকে ডগ স্কোয়াড সতর্কতামূলক আচরণ শুরু করলে নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
কয়েক ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর নাটকীয়তা ও ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেটগুলো জব্দ করে নিয়ে যান নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। অনেক দেন-দরবার ও দুঃখ প্রকাশের পর সন্ধ্যার দিকে কর্তৃপক্ষ প্যাকেটগুলো ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে বাংলাদেশ মিশন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের কপির প্যাকেট জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে রাখার জন্য নিয়ে আসা হয়। এ সময় এর দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা কাউকে কিছু না জানিয়ে রাস্তার পাশে সব প্যাকেট রেখে চতুর্থ তলায় বাংলাদেশ মিশনের কার্যালয়ে যান। আকস্মিকভাবে রেখে যাওয়া একাধিক প্যাকেট রাস্তার পাশে দেখেই সতর্ক হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের কপির মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের এই দায়িত্বহীন আচরণ বিস্মিত করেছে সিটি কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনকে।
বাংলাদেশ সময় আজ শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার কথা।