প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ: ফখরুল
মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এমন সময় একথা বলেছেন যখন দেশে গণতন্ত্রের জন্য একটা আন্দোলন শুরু হয়েছে। যখন মানুষ তাদের অধিকারের জন্য কথা বলছে। যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। চাল-ডাল-তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি-বিদ্যুৎ সংকট। সবমিলিয়ে দেশে যখন একটা চরম অব্যবস্থাপনা। রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেই সময় তার এ ধরনের হুমকি, এটা তিনি যদি মনে করেন এটা গণতন্ত্রের আন্দোলনকে দমন করবে তাহলে তিনি সঠিক জায়গায় বাস করছেন না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, মানুষ তার অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই সংগ্রাম করছে। এখানে হুমকি ধামকি দিয়ে কোনো কাজ হবে না।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের গাড়িতে হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত পরশু দলীয় কার্যালয়ের সামনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে যে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে তার প্রতিবাদে একটা সমাবেশ ছিল। সেই সমাবেশের পরে জানতে পারলাম, বিচারপতি মানিকের গাড়িতে নাকি হামলা হয়েছে। এটা কেউ দেখেনি। আমি জিজ্ঞাসা করলাম। সবাই বলছে কেউ দেখেনি। তিনি নিজে যে একটা টেলিভিশন চ্যানেলে বিবৃতি দিলেন সেটাও স্ববিরোধী। তিনি এক সময় বলছেন সামনে পুলিশ ছিল আবার বলছেন কেউ ছিল না। এই ধরনের একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই রাতেই আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িগুলোতে হামলা করেছে। প্রায় ১১-১২জনকে গ্রেফতার করেছে, রিমান্ডে নিয়েছে।
তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণতন্ত্রের সমস্ত রীতিনীতি ধ্বংস করেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, আজকে সরকার বলছে বৈশ্বিক সংকট। বৈশ্বিক সংকট একটা আলাদা ব্যাপার। কিন্তু বাংলাদেশে যেটা হয়েছে সেটা তাদের দুর্নীতির কারণে হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে পদে পদে তারা দুর্নীতি করছে। আজকেও পত্রিকায় বেরিয়েছে গত দশ বছরে কানাডায় যারা বাড়ি করেছেন তাদের মধ্যে তিনভাগের এক ভাগ বাংলাদেশি। এখন রেমিটেন্স কমে গেছে। শ্রমিকের সংখ্যা কিন্তু কমেনি। আরও বেড়েছে, তাহলে রেমিটেন্স কোথায় যাচ্ছে এই রেমিটেন্স বিদেশ থেকেই বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। পাচারটা করছেন সরকারি দলের সঙ্গে যারা জড়িত তারাই।
তিনি বলেন, বাড়াবাড়ি করছে আওয়ামী লীগের সরকার। তারাই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এবং পুরোপুরিভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে আমাদের যে সাংবাবিধানিক অধিকার, সমাবেশের অধিকার, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দিচ্ছে, গ্রেফতার করছে। কোনো সভ্য দেশে চিন্তা করতে পারেন যে সরকার হরতাল দিচ্ছে। বরিশালে সমাবেশের পাঁচদিন আগে বলেছে পরিবহন বন্ধ থাকবে। হঠাৎ করে নৌ-পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি স্পিডবোটগুলো ভোলা থেকে বরিশাল আসে সেগুলো বন্ধ করেছে। আজকে পত্রিকায় দেখলাম প্রাইভেট কারও নাকি বন্ধ। এটা তারা কোন ভাবে ব্যাখ্যা করবেন? তারা বলছে আমরাতো কিছু করিনি। আপনারাইতো সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। কি কারণে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চান, আবার একটা সাজানো পাতানো নির্বাচন করতে চান? কিন্তু জনগণ এবার জেগে উঠেছে। তারা এবার এসব প্রতারণা আর কিছুতে হতে দেবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, বাড়াবাড়ি বলতে উনি (প্রধানমন্ত্রী) কি বলতে চেয়েছেন সেটার জবাব আমি দিতে পারবো না। সেটার জবাব প্রধানমন্ত্রী দেবেন। কারণ এগুলো অনেক দেখেছি। আমরা আর ওই ফাঁদে পা দিচ্ছি না। আমাদের লক্ষ্য একটাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন।