প্রজনন সময়ে মা ইলিশ না ধরতে ভোলা জেলা প্রশাসকের আহবান লালমোহনে সহস্রাধিক জেলের নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে না নামার আশ্বাস

10/10/2013 8:55 pmViews: 13

pic-1.,মোঃ জসিম জনি, লালমোহন : ইলিশ প্রজনন সময়ে মা ইলিশ শিকার না করতে মেঘনার জেলেদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ভোলা জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় যাতে জেলেরা নদীতে নামতে না পারে সে জন্যও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও সচেতন মানুষদেরও এগিয়ে আসার আহবান জানান। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভোলার লালমোহন উপজেলার মেঘনা নদীর তীরে বাতিরখাল মৎস্য ঘাটে সহস্রাধিক জেলেদের নিয়ে এক সচেতনমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। সভায় জেলেদের পক্ষ থেকে প্রজননের এসময় কোন রকম ইলিশ ধরা হবে না বলে জেলা প্রশাসককে আস্বস্ত করেন জেলেরা।
জানা গেছে, আগামী রোববার ১৩ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর ১১ দিনের জন্য ইলিশ প্রজনন মৌসুম ঘোষণা করা হয়। এসময় উপকূলীয় মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ৫টি পয়েন্টে ১১ হাজার বর্গকিলোমিটার পানি সীমায় ইলিশ ধরা, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, বিক্রয় ও মজুদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। এ আইন অমান্যকারীদের ১ বছর থেকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এই ১১ দিন মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মা ইলিশ শিকার বন্ধে জেলেদের সচেতনতা সৃষ্টিতে সভা, মাইকিং, প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন, লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় ভোলার লালমোহনের মৎস্য অভয়ারণ্য এলাকা মেঘনা নদীর বাতিরখাল মৎস্য ঘাটে অভহিতকরণ সভায় ভোলা জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জেলেদের এসময় নদীতে না নামতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। তিনি জেলেদের এসময়টুকু দৈর্যধারণ করে থাকলে আগামীতে ইলিশের অভাব হবে না বলেও উল্লেখ করেন। প্রজননের এ মৌসুমে নদীতে কোস্টগার্ড, পুলিশসহ মৎস্য অফিস সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবে বলেও তিনি জানান। কেউ আইন অমান্য করলেও তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে। বাতিরখাল মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারন সম্পাদক এম. আলাউদ্দিন জামালের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এ.কে.এম. নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন, ধলীগৌরনগর ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল ইসলাম মিন্টু, বদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন মাঝি, সাবেক ইউপি মেম্বার অহিদুর রহমান প্রমূখ।
এদিকে মা ইলিশ নিষেধাজ্ঞার সময়ে আইনের তোয়াক্কা না করে প্রতিবছরই একটি সিণ্ডিকেট ইলিশ মজুদের ব্যবসায় নেমে পড়ে। এরা মোটা অংকের অর্থ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে। অভিযোগ রয়েছে এসব সিন্ডিকেটের সাথে টাকার বিনিময়ে শেষ মুহুর্তে রফা দফা হয়ে যায় সংশ্লিষ্টদের। সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণকারীারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকলেও প্রশাসনের অভিযানে গ্রেফতার হচ্ছে নিরিহ জেলেরা। নিরিহ জেলেদের এরা বেশি মাছ পাওয়ার প্রলোভন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজের আশ্বাস দিয়ে নদীতে নামায়। ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ এ প্রবাদটি অসহায় জেলেদের বেলায় যথাযথ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মেঘনা ও তেঁতুলিয়া পাড়ের অসহায় জেলেরা। তাদের দাবী ইলিশ মজুদকারী সিণ্ডিকেটকে আগে নিয়ন্ত্রণ করা হোক। তাহলেই সরকারের মূল উদ্ধেশ্য বাস্তবায়ন হবে।

Leave a Reply