পৌর নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার নির্দেশ খালেদা জিয়ার

13/12/2015 12:27 pmViews: 7
পৌর নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার নির্দেশ খালেদা জিয়ার


ক্ষমতাসীন দলের নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দলের নেতাকর্মীদের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পৌর নির্বাচনের মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ থেকে দলের প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে নামারও আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে দলের বৃহত্তর স্বার্থে বিদ্রোহী প্রার্থীদের আজকেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করারও আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।

শনিবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা কাউন্সিল, যুগ্ম মহাসচিব এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এসব নির্দেশ দেন। রাত ৯টায় এ বৈঠক শুরু হয়ে রাত ১১টায় শেষ হয়। সারা দেশে নির্বাচন সমন্বয়ে ৮টি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বৈঠক শেষে একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- পৌর নির্বাচন নিয়ে খালেদা জিয়া বলেছেন, ভোট কারচুপি হবে এটা জেনেই আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে গিয়েছি। তিনি প্রধানত দুটি বিষয়ে অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রথমত, নির্বাচনে যত সমস্যাই হোক, ক্ষমতাসীন দল যতই ‘নিপীড়নমূলক’ আচরণ করুক- সবাইকে তা উপেক্ষা করেই মাঠে থাকতে হবে। ভোট কেন্দ্রে পাহারা দিতে হবে। প্রার্থীদের জয়ের ব্যাপারে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার দিকে সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলেছেন তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘স্থানীয় এ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সরকারেরই ক্ষতি হবে। দেশে-বিদেশে আবারও তারা চাপের মুখে পড়বে।’ দ্বিতীয়ত, বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে বলেছেন খালেদা জিয়া। আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন হওয়ায় তিনি এ নির্দেশ দেন। এছাড়া তিনি নেতাদের নিজ নিজ এলাকায় প্রচার কাজে অংশ নিতে বলেছেন। সাবেক সংসদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের যখন যেখানে দায়িত্ব দেয়া হবে তখন তা পালন করতে হবে। বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত না নিয়ে তাদের বুঝিয়ে দলের পক্ষে কাজ করাতে নির্দেশ দেন খালেদা জিয়া। এ প্রসঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আজ অনেকেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন।

বৈঠকে এক নেতা জামায়াত নিয়ে দলের ভূমিকা কি তা স্পষ্ট করার পরামর্শ দেন। এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে যাচ্ছি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব নৌকার সঙ্গে। আপনারা সেভাবে প্রস্তুতি নেন। জামায়াতের সঙ্গে এখনও চূড়ান্ত কোনো সমঝোতা হয়নি। প্রতিটি পৌরসভায় একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে স্থানীয়ভাবে জামায়াতের প্রার্থীর সঙ্গেও আলোচনা করতে বলা হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার আগ পর্যন্ত বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বলেন তিনি।

বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, রহুল আলম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, শামছুজ্জামান দুদু, আবদুল মান্নান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার হায়দার আলী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, এএসএম আবদুল হালিম, জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মিজানুর রহমান মিনু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার, ডা. শাখাওয়াত হোসেন জীবনসহ ৪৫ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে ১৫ জন পৌর নির্বাচন, দল পুনর্গঠনসহ চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় করণীয় নিয়ে কথা বলেন।

৮টি কমিটি গঠন : পৌর নির্বাচনে কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল ও বিভাগওয়ারি কমিটি গঠন নিয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাসচি মির্জা ফখরুল ইসলাম ও যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহানের সঙ্গে কথা বলেন খালেদা জিয়া। জানা গেছে, একটি কেন্দ্রীয় ও সাত বিভাগে সাতটি কমিটি গঠন করা হয়।

কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর সদস্য সচিব থাকবেন যুগ্ম-মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান। স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যানদের আহ্বায়ক এবং বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সদস্য সচিব করে সাতটি কমিটি করা হয়। ঢাকা বিভাগে দুটি কমিটি থাকবে। একটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আর ময়মনসিংহের জেলাগুলোর দায়িত্বে থাকবেন আ স ম হান্নান শাহ। চট্টগ্রামে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, রাজশাহীতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, খুলনায় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, বরিশালে ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও রংপুরে দলের দায়িত্ব পালন করবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান।

Leave a Reply