পিলখানা হত্যাযজ্ঞের রায় কর্নেল জাহিদ ও মেজর আশরাফের পরিবারের শুকরিয়া আদায় রায় কার্যকরের দাবি
প্রেমানন্দ ঘরামী ॥
“শুধু রায় ঘোষণা করলেই হবে না, তা কার্যকর করতে হবে। না হলে নিহত সৈনিকদের আত্মা শান্তি পাবেনা। দীর্ঘদিন পরে হলেও আজ আমরা সঠিক বিচার পেয়েছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই ঘোষিত রায় কার্যকর করা হবে। এ রায় বাস্তবায়ন করা হলে ভবিষ্যতে আমার স্বামীর মতো আর কাউকে নির্মম মৃত্যুর স্বীকার হতে হবে না”।
পিলখানার হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ১৫৪ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশসহ ১৫৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় ঘোষণা হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় আবেগআপ¬ুত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন, পিলখানা ট্রাজেডিতে নিহত বরিশালের কৃতি সন্তান শহীদ কর্ণেল বি.এম জাহিদ হোসেন চপলের স্ত্রী নিশরাত হক ছন্দা। প্রায় একই ভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন একই উপজেলার বেলুহার গ্রামের নিহত মেজর কাজী আশরাফের পরিবারের সদস্যরা। পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ময়মনসিংহের বিডিআর সেক্টর কমান্ডার ও বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার চাঁত্রিশিরা গ্রামের কৃতি সন্তান কর্নেল বি.এম জাহিদ হোসেন চপল ও একই উপজেলার বেলুহার গ্রামের মেজর কাজী আশরাফ।
সূত্রমতে, চাঁত্রিশিরা গ্রামের মৃত কাসেম মিয়ার চার পুত্রের মধ্যে কর্ণেল বি.এম জাহিদ হোসেন চপল ছিলেন সবার ছোট। তাই তিনি (জাহিদ) ছিলেন পরিবারের সবার আদুরের। ১৯৮২ সালে কমিশনার পদে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। পিলখানা ট্রাজেডির মাত্র দু’মাস পূর্বে যশোর সেনানিবাস থেকে কর্নেল জাহিদ ময়মনসিংহ বিডিআর সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যোগদান করেন। তার স্ত্রী নিশরাত হক ছন্দাসহ দু’পুত্র নিলয় ও নিরঝর তৎকালীন সময়ে থাকতেন ঢাকার উত্তরার একটি ভাড়াটিয়া বাসায়। বিডিআরের বিদ্রোহী জওয়ানদের গুলিতে নিহত হওয়ার একদিন পর ঢাকার নবাবগঞ্জের ভেড়িবাঁধ এলাকা থেকে জাহিদের লাশ সনাক্ত করেন তার পরিবারের সদস্যরা।
শহীদ কর্ণেল জাহিদ হোসেনের স্ত্রী নিশরাত হক ছন্দা ক্ষোভের সাথে বলেন, যারা আমাকে করেছে বিধবা, আর সন্তানদের করেছে পিতৃহারা। সেইসব ঘাতকদের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। ওইসব খুনীদের বিরুদ্ধে ঘোষিত রায় কার্যকর করার মাধ্যমে তিনি জাতিকে কলংঙ্কমুক্ত করার দাবি করেছেন। দীর্ঘদিন পর পুত্রের ঘাতকদের রায় শুনে শুকরিয়া আদায়ের পাশপাশি কান্নায় ভেঙ্গে পরেন নিহত কর্নেল জাহিদের বৃদ্ধা মা জহুরা বেগম (৮৫)সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।