পারিকরকে প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবো না
পারিকরকে প্রধানমন্ত্রী
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবো না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো দেশের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, আমরা কোনো প্রকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বরদাশত করব না এবং কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আমাদের দেশের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করতে দেবো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সফররত ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর গোপালকৃষ্ণ প্রভু পারিকর গতকাল গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি একথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার আসন্ন ভারত সফরকালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর বীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোরও আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর উত্তরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ছিল এবং আমরা সেই সহযোগিতাটাই করেছি। সম্প্রতি বাংলাদেশি জেলেদের উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করায় প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় কোস্টগার্ডকেও ধন্যবাদ জানান। এ সময় ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বাংলাদেশের কোস্টগার্ডের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন। পারিকর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে প্রভূত উন্নতি করেছে, যা ভারত এখনও করতে পারেনি। বৈঠকের শেষ অংশে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়া ভারতীয় হেলিকপ্টারের একটি রেপ্লিকা এবং যুদ্ধকালীন ছত্রীসেনাদের অপারেশন পরিচালনার আলোকচিত্র প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর বীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, তিনি শিখা অনির্বাণে পৌঁছালে সহকারী বিমানবাহিনী প্রধান (প্রশাসন) এয়ার ভাইস মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত তাকে অভ্যর্থনা জানান। পরে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার সফর সঙ্গীগণসহ চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি পরিদর্শন করেন। আইএসপিআর জানিয়েছে, ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার বাংলাদেশ সফরে আসেন। ওই দিনই প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে এবং এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।