আসলে তাদের হুমকি দেয়া হয়েছে যে, পিটিআইর সাথে থাকলে তাদের পরিবার এবং ব্যবসাকে রেহাই দেয়া হবে না। পাকিস্তানে এর আগে কখন এমন হয়েছে? এসব নেতাদের আত্মীয়-স্বজনদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ তারা রাজনীতির সাথে জড়িতই ছিল না। এখন যে ধরনের ঘটনা ঘটছে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ইমরান খান বলেন, গত বছরের ২৫শে মে’র পরে যা ঘটেছে সব একটি পরিকল্পনারই অংশ। আমাদের গণতন্ত্রকে এখন যতটা আঘাত করা হয়েছে জেনারেল মোশাররফের স্বৈরাচারের সময়ও অবস্থা এত নাজুক ছিল না। জেনারেল মোশাররফের সময়ে মিডিয়া চালু ছিল। আমি তখন বিরোধী দলে ছিলাম অথচ এমন কঠোরতা তখন দেখিনি। আমরা জেনারেল জিয়ার সময়ে পৌঁছে গেছি। এখন আর কোনো মৌলিক অধিকার নেই। সুপ্রিম কোর্টের রায় মানা হচ্ছে না। সরকার সংবিধানের তোয়াক্কা করে না। অথচ আমার সারে তিন বছরের শাসনের সময় বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিল। কেউ বলতে পারবেন যে আমরা হস্তক্ষেপ করেছি? মিডিয়া ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীন। শুধু আমাদের আজকের মিডিয়া অবস্থার সাথে তুলনা করুন। চাইলেই আমাদের সরকারের সমালোচনা করা গেছে।
ইমরান বলেন, গত ৭০ বছর ধরে পাকিস্তানের ইতিহাসের অর্ধেক সময় শাসন করেছে সেনাবাহিনী আর বাকি অর্ধেক সময় শাসন করেছে দুইটি পরিবার। দলে নারীর অংশগ্রহণ নিয়ে খান বলেন, এত নারী সদস্য থাকায় পিটিআই দল হিসেবে গর্বিত। অসংখ্য নারী আমাদের সমাবেশে অংশ নিয়েছিল, সব ধরণের নারীরা তাতে এসেছিলেন। আমি মনে করি রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের থেকে সমাজের জন্য ইতিবাচক আর কিছু হতে পারে না। এর মানে সমাজ জেগে উঠেছে। পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান দাবি করেছেন যে, তার দলের ২৩ হাজার কর্মীকে গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা করছে সরকার। ১০ হাজারের বেশি কর্মী এখনও কারাগারেই আছে। তিনি বলেন, এই রাজনৈতিক কর্মীরা সহিংসতার শিকার হয়েছেন। দোষীদের কারাগারে রাখুন কিন্তু বাকিদের ছেড়ে দিন কারণ তাদের অধিকাংশই ৯ই মে’র দিনে রাস্তায় ছিলই না। সরকার পাকিস্তানের রাজনীতি নষ্ট করছে এবং দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, আমরা জানি দেশে কিছু আইন আছে। কিন্তু ক্ষমতাবানরা কি আইন না মানলে শাস্তি পাবে না? সরকারের অংশ হলেই সব দোষ মাফ? পিটিআই চেয়ারম্যান ৯ই মের দাঙ্গার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। ওই দাঙ্গার সঙ্গে আসলে কারা জড়িত ছিল তা বের করতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন তিনি। ইমরান বলেন, তদন্ত করা এবং দোষীদের খুঁজে বের করা আদালতের কাজ। আমরা সম্পূর্ণ সাহায্য করতে প্রস্তুত। যারা দায়ী তাদের শাস্তি দিতে হবে। ওইদিন সরাসরি গুলি করে ২৫ জন পিটিআই কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আরও শতাধিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিশ্বের কোথায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে গুলি করা হয় না। অথচ এখানে তদন্ত পর্যন্ত নেই!